গত ৭ মার্চ ইতালি থেকে যশোরের চৌগাছায় নিজ বাড়িতে ফেরেন এক দম্পতি। তিনদিন নিজ বাড়িতে কাটানোর পর গত সোমবার (৯ মার্চ) সস্ত্রীক শ্বশুরবাড়ি ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর মাস্টারপাড়ায় বেড়াতে যান তিনি। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ওই স্ত্রীসহ ওই ব্যক্তিকে তার শ্বশুরবাড়িতেই একজন স্বাস্থ্য সহকারীর তত্ত্বাবধানে ১৪ দিনের “কোয়ারেন্টাইন” রাখা হয়েছে।
শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে স্ত্রীসহ আটকা পড়ার বিষয়ে ওই ব্যক্তির ছোট ভাই মোবাইলফোনে সাংবাদিকদের জানান, ভাই-ভাবি ইতালি থেকে এসেছেন। তাই, একজন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে ১৪ দিনের জন্য তাদেরকে সেখানেই (শ্বশুরবাড়িতে) “হোম কোয়ারেন্টাইনে” থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে, গত মঙ্গলবার (১০ মার্চ) ইতালি ফেরত দম্পতির কথা জানাজানি হলে চৌগাছায় আতংকের সৃষ্টি হয়। পরে বুধবার (১১ মার্চ) ওই ব্যক্তির বাবাসহ পরিবারের ৬ জনকে একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।
তবে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৬ জনের কারও শরীরে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কোনও লক্ষণ পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার।
আরও পড়ুন - করোনাভাইরাস: জেনে নিন কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন কী?
ডা. লুৎফুন্নাহার বলেন, “সকালেই সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) ফোন করে নিশ্চিত হয়েছি ওই দম্পতির শরীরে করোনার কোনও লক্ষণ পাওয়া যায়নি।”
তিনি বলেন, “বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরও ইতালি ফেরত ব্যক্তির বাবাসহ ছয়জনকে তত্ত্বাবধানে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
বিষয়টিতে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি নিজে গিয়ে তাদের কীভাবে থাকতে হবে সে বিষয়ে বুঝিয়ে এসেছি। তারা নিজেরদের ঘরেই থাকবেন।”
তিনি জানান, ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ১২টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হাসপাতালে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম, ব্যবস্থাপনা কমিটি ও র্যাপিড রেসপন্স কমিটি করা হয়েছে।
যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, “কোয়ারেন্টাইন বলা যাবে না। যেহেতু শুধুমাত্র আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসলে তাকেই কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হয়। উনারা যাদের সংস্পর্শে ছিলেন, তারাতো রোগী নন। আমরা একে পর্যবেক্ষণে রাখা বলছি।”
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বিদেশ থেকে ফেরার পর ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিজ বাড়িতেই অন্তত ১৪ দিন অবস্থান করতে অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।