দেশে চলছে করোনাভাইরাস মহামারি। সংকটপূর্ণ এই সময়ের মধ্যেই কোল জুড়ে সন্তান আসে শরীফ হোসেন ও কেয়া আক্তার দম্পতির। কিন্তু অভাবের সংসারে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করার মতো অর্থ ছিলো না তাদের হাতে। তাই বাধ্য হয়ে সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানকে বিক্রি করে হাসপাতালের খরচ মেটান তারা।
শুক্রবার (১ মে) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কোনাবাড়ি থানা এলাকার সেন্ট্রাল মেডিকেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। পরে জিএমপি’র কমিশনার আনোয়ার হোসেন গার্মেন্টসকর্মী ওই দম্পতির কোলে নবজাতকে ফিরিয়ে দেন।
গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুরের এনায়েতপুর এলাকার বাসিন্দা স্বামী শরীফ হোসেন জানান, গত ২১ এপ্রিল তার স্ত্রী কেয়া আক্তারকে কোনাবাড়ির সেন্ট্রাল মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিনই সিজারের মাধ্যমে ছেলে সন্তান প্রসব করেন তিনি। শুক্রবার (১ মে) তাদের হাসপাতাল থেকে ফেরার কথা ছিলো। সেদিন তারা জানতে পারেন হাসপাতালের বিল ৪৭ হাজার টাকা এসেছে। এর মধ্যে তারা ২২ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু বাকি টাকা তাদের কাছে ছিলো না। তাই বাধ্য হয়ে ২৫ হাজার টাকায় নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করে, সেই টাকায় হাসপাতালের বিল মিটিয়ে বাড়ি ফিরে যান।
এদিকে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান জিএমপি’র কমিশনার আনোয়ার হোসেন। ঘটনার সত্যতা জানতে পেরে নিজেই হাসপাতালের টাকা পরিশোধ করে সন্তানকে তার মার কোলে ফিরিয়ে দেন।
কমিশনার আনোয়ার হোসেন জানান, এক দম্পতি টাকার অভাবে নবজাতককে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে বলে জানতে পারেন তিনি। ওই দম্পতি নগদে ১৫ হাজার টাকা পান এবং বাকি ১০ হাজার টাকা সাতদিন পর পরিশোধের কথা ছিল। তা দিয়ে তারা হাসপাতালের পাওনা পরিশোধ করেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় নবজাতকটি কিনে নেওয়া নিঃসন্তান ব্যক্তিকে তিনি ২৫ হাজার টাকা ফেরত দেন। পরে নবজাতককে শরীফ-কেয়া দম্পতির বাড়িতে গিয়ে তাদের হাতে সন্তানকে তুলে দেন। এ সময় তাকে লালন পালনের জন্য আরও পাঁচ হাজার টাকা দেন তিনি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। সন্তানটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমার খুব ভালো লেগেছে।”