বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা সুপার সাইক্লোন আম্ফানের প্রভাবে নোয়াখালী জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরাঞ্চলে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। নোয়াখালীতে থেমে থেমে বৃষ্টি ও ধমকা হাওয়া বইছে। নদী উত্তাল রয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিংয়ের পাশাপাশি বিপদ সংকেত “সাইরেন” বাজানো হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে হাতিয়া উপজেলায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিসহ দমকা হাওয়া শুরু করে এক পর্যায়ে, দুপুরে নদীতে জোয়ারের পানি বাড়তে থাকে। এতে করে নলচিরা, সুখচর, চরঈশ্বর ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি জায়গায় বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এতে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে অন্তত কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ সময় এলাকার কয়েকটি সাইক্লোন শেল্টারের নিচ পর্যন্ত পানিতে ডুবে যায়। প্লাবিত এলাকার বেশ কিছু কাঁচা ঘর পানিতে ডুবে যায়। তবে, কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
চরঈশ্বর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. রাশেদ উদ্দিন জানান, বেড়িবাঁধের ভেতর ও বাইরের শতাধিক ঘরবাড়ি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে লোকজনকে আগেই সরিয়ে নেওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, নলচিরা, তমরদ্দি, সুখচর, চরঈশ্বর ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। এতে কিছু ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুপুর তিনটার পর থেকে পুনরায় জোয়ারের পানি নামতে শুরু করে। রাতের দিকে পুনরায় জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। তবে, এসব নদী তীরবর্তী বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকা থেকে ২৪০০০ মানুষ ও ৮০০ গবাদি পশু নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস দুপুর ১টার দিকে জানান, উপকূলীয় উপজেলা সদর, হাতিয়া, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাটের ৪৬৮টি আশ্রয়কেন্দ্র ৬ হাজার ৭০০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ৩৩০ জন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মী ও শুকনা খাবার প্রস্তত রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫ হাজার লোককে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জরুরি চিকিৎসাসেবার জন্য মেডিকেল টিম, যানবাহন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও লকডাউনকৃত বাড়ির লোকজনকে নিকটবর্তী আইসোলেশন কেন্দ্রে নেওয়ার ব্যবস্থা ছাড়াও সার্বক্ষণিক প্রস্তুতিমূলক কাজ করছে প্রশাসন। তবে ঘূর্ণিঝড়ের সময় রাতে আম্ফানের প্রভাবে দ্বীপ ও চরাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতার জোয়ারে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।”