গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় নিখোঁজ হওয়ার প্রায় তিন মাস পর কমলেশ বাড়ৈ (৪২) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, স্ত্রী সুবর্ণা বাড়ৈ ও তার প্রেমিক মম্মথ বাড়ৈ মিলে হত্যার পর স্থানীয় একটি মাছের ঘেরের পাড়ে তাকে মাটিচাপা দেয়।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন কমলেশ। মঙ্গলবার (২৬ মে) বিকেলে উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের তালপুকুরিয়া গ্রামের একটি মাছের ঘেরের পাড় থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের স্ত্রীসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের ভাই রবেণ বাড়ৈ জানান, কমলেশের স্ত্রী সুবর্ণা বাড়ৈর সঙ্গে প্রতিবেশী মাছের ঘের ব্যবসায়ী মম্মথ বাড়ৈর পরকীয়া প্রেম ছিলো। বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হতো। একাধিকবার এ নিয়ে এলাকায় সালিশ বৈঠকও করা হলেও সমাধান হয়নি।
তার অভিযোগ, পরকীয়া প্রেমিককে দিয়ে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সুবর্ণা। সে অনুযায়ী গত ২৬ ফেব্রুয়ারি কমলেশকে অপহরণ করা হয়।
ভাই নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় গত ৩ মার্চ কোটালীপাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রবেণ। যার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তে নামে পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে কোনো খোঁজ মেলেনি।
মঙ্গলবার মম্মথের ঘেরের পাড়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি ঘাস কাটতে গিয়ে মাটি খোড়া দেখতে পান। সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কমলেশের মরদেহ উদ্ধার করে।
পরকীয়া প্রেমিক মম্মথ ও তার লোকজনের সহযোগিতায় স্ত্রী সুবর্ণাই কমলেশকে হত্যা করে মাটিচাপা দিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ স্বজনদের।
এ বিষয়ে কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ লুৎফর রহমান বলেন, পরকীয়া প্রেমের জেরেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় কমলেশের স্ত্রী সুবর্ণা বাড়ৈ, তার পরকীয়া প্রেমিক মম্মথ বাড়ৈর ভাই কৃষ্ণ বাড়ৈ, সহযোগী বিষ্ণু বাড়ৈ ও মম্মথের বন্ধু কালু বাড়ৈকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর সুবর্ণাই সেটি কমলেশের বলে শনাক্ত করেন। ময়নাতদন্তের জন্য সেটি গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশ ওই গ্রামে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।