কোভিড-১৯ চিকিৎসায় বহুল আলোচিত অ্যান্টিভাইরাল রেমডেসিভির ব্যবহারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত নতুন স্বাস্থ্যবিধিতে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার বিকল্প হিসেবে প্লাজমা থেরাপি না নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই নতুন স্বাস্থ্যবিধি প্রকাশিত হলো এমন একটি সময়ে যখন, বাংলাদেশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কোভিড-১৯ চিকিৎসায় রেমডেসিভির উৎপাদন করতে শুরু করেছে।
অন্যদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে গবেষণা শুরু করেছে এমন খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর থেকে অন্যান্য কয়েকটি হাসপাতালে প্লাজমা থেরাপিও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন ধরনের এই করোনাভাইরাসের চিকিৎসার আগে কোনধরনের অ্যান্টিভাইরালের ব্যবহারে অনুমোদন দেয়নি।
গত বুধবার (২৭ মে) প্রকাশিত নতুন স্বাস্থ্যবিধিতে বলা হয়, তাদের পূর্বের সুপারিশে কোনও পরিবর্তন আসেনি। একইসাথে, এটি সংস্থাটির আগের স্বাস্থ্যবিধি ও অন্যান্য একাধিক আন্তর্জাতিক মানসম্মত বিধিমালার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।
রেমডেসিভির ও অন্যান্য এন্টিবাইরালের বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্ সংস্থাটির দাবি, কয়েকটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে বিদ্যমান গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এসব ওষুধের কোনোটিরই উচ্চমানের ইতিবাচক ফল পাওয়ার প্রমাণ মেলেনি। এমনকি এসব ওষুধের জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও পাওয়া গিয়েছে।
রেমডেসিভির ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো ছিলো, হেপাটিক এনজাইম বেড়ে যাওয়া, জিআই (গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল) জটিলতা, ফুসকুড়ি, মূত্রাশয় বৈকল্য ও হাইপোটেনশন।
এদিকে, জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “আইইডিসিআর অনেক আগেই নিশ্চিত করেছে যে এই পদ্ধতিগুলো শুধুই পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহৃত হতে পারে তবে তা নিশ্চিত কোনও চিকিৎসাপদ্ধতি নয়। একইসাথে এরসাথে জড়িত চিকিৎসকদেরও রোগীদের কাছ থেকে এবিষয়ে অনুমতি নিতে হবে এবং রোগীর ওপর নির্ভর করবে তিনি এতে অংশ নেবেন কিনা।”
তিনি বলেন, “বিষয়টি এমন নয় যে এন্টিভাইরাল অথবা প্লাজমা থেরাপি সব রোগীর ওপরই ইচ্ছেমত ব্যবহার করা হবে। যদিও এখনও পর্যন্ত এর কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবে কেউ যদি এইসকল পরীক্ষামূলক কাজ করতে চায় তাকে অবশ্যই আগে ন্যাশনাল রিভিউ কমিটির অনুমোদন নিতে হবে।”