মাসিক ভাড়ার দাবিতে বগুড়া শহরের কামারগাড়ি এলাকায় “মুন্নুজান ছাত্রী নিবাস” নামে একটি হোস্টেলে ১৩ ছাত্রীকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। সোমবার (১ জুন) দুপুরে খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা ও পুলিশ গিয়ে হোস্টেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সমঝোতা করেন।
জানা গেছে, শহরের কামারগাড়ি এলাকায় ওই হোস্টেলটিতে থাকেন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী নারী। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থল বন্ধ হয়ে গেলে সেখানে বসবাসরত নারীরা যার যার বাড়িতে চলে যান। সোমবার হোস্টেল খোলার খবর পেয়ে জরুরি প্রয়োজনে সেখানে আসেন তাদের ১৩ জন। এ সময় হোস্টেল সুপার হাফিজা বেগম তাদের কাছে এপ্রিল থেকে তিনমাসের ভাড়া দাবি করেন। অপারগতা জানালে তাদেরকে অবরুদ্ধ করা হয়।
সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী মোসা. রুমা জানান, “সোমবার ১৩ জন ছাত্রী হোস্টেলে ফিরে দেখি রুম তছনছ করা। জামা-কাপড়সহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি গেছে। আশপাশের অন্য ছাত্রীদের রুমেও চুরি হয়েছে। এমতাবস্থায় বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য রওনা করলে হোস্টেল সুপার জানান, তিন মাসের ভাড়া পরিশোধ না করে যাওয়া যাবে না।”
এইচএসসি পরীক্ষার্থী সিরাজগঞ্জের দ্বীপান্বিতা জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে তিনি বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। সোমবার বইপত্র নিতে এলে তিন মাসের ভাড়া দাবি করে পথরোধ করা হয়।
একই অভিযোগ করে রিফাত জাহান নামে আরেক ছাত্রী জানান, হোস্টেল সুপার টাকার জন্য তার পার্স তল্লাশি করেছেন।
এক ছাত্রীর অভিভাবক রোজিনা বেগম জানান, কর্তৃপক্ষের কাছে প্রত্যেক ছাত্রীর এক মাসের অগ্রিম ভাড়া জমা দেওয়া আছে। তারপরেও কর্তৃপক্ষ অশোভন আচরণ করেছে।
খবর পেয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী ও স্টেডিয়াম পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থলে আসেন।
এসআই জাহাঙ্গীর জানান, মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ছাত্রীদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। টাকা না থাকলে পরে এসে ছাত্রীরা দিয়ে যাবেন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে তারা ফিরে গেছেন। পরবর্তীতে এমন আচরণ করা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে হোস্টেল সুপার হাফিজা বেগম বলেন, এপ্রিল থেকে তিন মাসের ভাড়া চাওয়া হলে ছাত্রীরা দিতে রাজি হয়নি। কারও সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়নি।
হোস্টেলে চুরির কথা দৃঢ়তার সঙ্গে অস্বীকার করেন তিনি।