মাদারীপুরে গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত যুবকের সাথে ভুক্তভোগীকে জোর করে বিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ওই যুবকের নাম সোহাগ মুন্সী। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার ফসলী গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত ২ জুন মাদারীপুর থেকে ওই কিশোরীকে অপহরণ করেন সোহাগ। ৮ জুন পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। এই ঘটনায় সোহাগের বিরুদ্ধে একটি অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়।
পরে অপহরণ করে সোহাগ তাকে ধর্ষণ করেছে বলে পরিবারের লোকজনকে অবহিত করে ভুক্তভোগী। এ বিষয়ে জানতে পেরে গত ২০ জুন মীমাংসার জন্য শালিস ডাকেন পেয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, ইউপি সদস্য সবুর ও ইউপি সদস্য শহীদ।
স্থানীয়রা জানান, শালিস বিচারে ধর্ষণের অভিযোগে সোহাগকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ভুক্তভোগীকে বিয়ে করার আদেশ দেয়া হয়।
কিশোরীর বাবা ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “সোহাগের বোনের বাড়ি আমার বাড়ির পাশে। সেই সুবাদে প্রায়ই এখানে আসতো সে। সোহাগ আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আমরা থানায় গিয়ে মামলা করলে পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার করে।”
“অপহরণের পর ধর্ষণের শিকার হয়েছিল বলে জানিয়েছিল আমার মেয়ে। কিন্তু সেই ধর্ষকের সাথেই জোর করে আমার মেয়ের বিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি চেয়ারম্যানের পা ধরে, তবুও তিনি শোনেননি। আমার মেয়েকে জোর করে বিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি আমার মেয়েকে ফেরত চাই,” যোগ করেন তিনি।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে পেয়ারপুরের ইউপি সদস্য সবুর জানান, “দুই পক্ষের সম্মতি নিয়ে বিয়ে দেয়া হয়েছে। কাউকে জোর করা হয়নি। কন্যাপক্ষকে জরিমানা হিসেবে ৩০ হাজার টাকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই টাকা এখনও ওই কিশোরীর বাবা হাতে পাননি। হয়তো এই কারণেই তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করছেন।”
এদিকে এই রকম কোনো শালিসই ডাকা হয়নি বলে দাবি করেছেন পেয়ারপুর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, “দুই পরিবারই গরীব। তারা আমার কাছে পরামর্শ চাইতে এসেছিল। আমি তাদের বলেছি যে তোমরা মিলমিশ হয়ে যাও। ধর্ষণ ও অপহরণ শালিসযোগ্য নয়। তাই আমি কোনো শালিস করিনি।”
ওই অপহরণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক প্রবাস কুমার বসু ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “ধর্ষণ ও অপহরণ শালিসযোগ্য নয়। আমি শুনেছি যে স্থানীয়রা শালিস বসিয়ে বিচার করেছেন। আমরা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার চেষ্টা করছি।”
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা বলেন, “ধর্ষণ কিংবা অপহরণের মামলা বিচারাধীন থাকাকালীন স্থানীয় শালিসের মাধ্যমে বিচার করা আইন বহির্ভূত। হয়তো সামাজিক থেকে বিবেচনা করে দুই পরিবারের সম্মানের কথা চিন্তা করে এটা তারা করেছেন। কিন্তু কাজটি