কক্সবাজারের টেকনাফে তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়িগুলোতে হানা দিয়েছে পুলিশের বিশেষ দল। শুক্রবার (১ জুন) সকালে টেকনাফের পৌরসভার তিনটি গ্রামে পুলিশ অভিযান চালায়।
বৃহস্পতিবার (৩১ মে) অনলাইন পত্রিকা বাংলা ট্রিবিউনে ‘রাজপ্রাসাদ ছেড়ে পালিয়েছে ইয়াবা বাবারা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে পুলিশ এ অভিযানে নামে।
পুলিশের ভাষ্যমতে, কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে বেশ কয়েকটি গ্রামে ইয়াবার টাকায় ‘রাজপ্রাসাদ’র মতো বাড়ি বানিয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। মাদক ইয়াবা দেশের যুবসমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সরকারের নির্দেশে সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকালে কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া ও পরিদর্শক রাজু আহমদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়া, জালিয়াপাড়া, দক্ষিণপাড়া গ্রামে অভিযান চালানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ সময় অর্ধশতাধিক বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। তবে মাদক ব্যবসায়ীরা বাড়িতে না থাকায় তাদের কাউকেই আটক করা যায়নি। অভিযান চলাকালে টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার ইয়াবা ব্যবসায়ী ১১ মামলার পলাতক আসামি মো. জোবাইর, তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক, মো. সালমান, মো. হাসান আলী, রেজাউর করিম রেজা, মো. আবদুল্লাহ ও তার ভাই মো. জব্বারের বাড়িতে তল্লাশি করে পুলিশ।
পুলিশের পরিদর্শক রাজু আহমদ বলেন, ‘ইয়াবার টাকায় টেকনাফে বেশ কয়েকটি গ্রামে রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি বানিয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। তবে তারা সবাই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।’
চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে কক্সবাজার জেলায় এ পর্যন্ত ৬ জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে বলে দাবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এরমধ্যে টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হকের মৃত্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তার পরিবার দাবি করেছে—‘একরামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে’।
পুলিশের সূত্র জানায়, মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারত ও ওমরা পালনের নামে সৌদি আরবে পালিয়ে গেছে। অনেকে ট্রলারযোগে সমুদ্রেপথে মিয়ানমারে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আবার কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিচ্ছে।
জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বাড়িগুলো দেখতে অনেকটা ‘রাজপ্রাসাদ’-এর মতো। এসব বাড়িতে শুক্রবার সকালে অভিযান চালানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘কোনও মাদক ব্যবসায়ীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত ইয়াবা বন্ধ না হবে, ততক্ষণ এ অভিযান চলবে।’