উজানের পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে জামালপুরে যমুনার পানি বেড়ে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। জেলার ৭টি উপজেলার ৮টি পৌরসভা ও ৬০টি ইউনিয়নের ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বন্যার কারণে তীব্র খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার পাঁচটি নদ-নদীর ও শাখা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যার্তদের দুর্ভোগ কমাতে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন। তবে, সার্বিকভাবে বন্যা পরিস্থিতিত্র অবনতি হলেও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমেছে।
জামালপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) আব্দুল মান্নান জানান, রবিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে জামালপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জামালপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ জানান, উজানে ও পাহাড়ি এলাকায় আরও একটি বড় বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে পানি একটু কমে আবারও বৃদ্ধি পাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জামালাপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ঢাকা ট্রিবিউন
এর মধ্যে দুর্গত এলাকায় মানুষ কোনোমতে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিলেও অধিকাংশ পরিবার ত্রাণের আওতায় আসেনি। গো-খাদ্যের অভাব ও গরু চুরির আতঙ্ক নিয়ে দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে দিনাতিপাত করছে বানভাসিরা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী জানান, জেলায় নতুন করে নগদ ৮ লাখ টাকা ও ২০০ মেট্রিক টন চাল, চার হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে। এ নিয়ে বন্যায় দুর্গতদের মাঝে এক হাজার ২৮৪ মেট্রিকটন চাল, ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ১১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, “বন্যার্তদের মধ্যে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। ত্রাণ পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তি কেউ বাদ পড়বেন না। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিন দুর্গতদের চার হাজার পিস তৈরি করা রুটির সঙ্গে গুড় দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না করা খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত আছে।”
জামালপুর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. দেলোয়ায় হোসেন জানান, “জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণসহ বন্যা কবলিত দুর্গম চরাঞ্চলে নৌ-টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।”