জামালপুরে ঈদুল আজহার পরের দিন অজ্ঞাত একটি লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। নিহত আল আমিন শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার কাজীগলি গ্রামের মো. আমিরুল ইসলামের বড় ছেলে। এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. দেলোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, গত ২ আগস্ট সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের পূর্বপাড়দিঘুলী এলাকায় একটি কালভার্টের পাশে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে নিহতের পরিচয় উদ্ধার করে পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়া হয়। পরের দিন মো. আমিরুল ইসলাম মর্গে লাশটি তার বড় ছেলের বলে নিশ্চিত করেন এবং নিজে বাদী হয়ে জামাল্পুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
হত্যার কারণ অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে নিহত আল আমিন মাদকাসক্ত ছিল। গত ১০ আগস্ট জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের ছোট ভাই আরিফুল ইসলামকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় মাদকাসক্ত হওয়ায় আল আমিনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে থেকেই তার বাবা মো: আমিরুল ইসলাম, নানা মো. আক্তারুজ্জামান দুদু (৪৮) ও রুবেল মিয়া (২০) জামালপুর সদর উপজেলার ছোনটিয়া এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে বাবাকে বাড়ি নিয়ে আসার কথা বলে আরিফুল বড় ভাই আল আমিনকে মোটরসাইকেলে করে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। সেখানে পৌঁছানোর সাথে সাথেই অপেক্ষারত তিনজন আল আমিনের আল আমিনের হাত-পা বেধে গলায় গামছা পেচিয়ে হত্যা করে তার লাশ ধান ক্ষেতের মধ্যে রেখে পালিয়ে যায়।
আরিফুলের স্বীকারোক্তি পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে আক্তারুজ্জামান দুদু ও রুবেল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারাও হত্যাকাণ্ডে নিজেদের ও আল আমিনের বাবা আমিরুল ইসলামের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
এসপি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “গ্রেফতার ৩ ব্যক্তিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পিতা মামলার বাদী হলেও তাকে এখন আসামি হিসেবে গণ্য করা হবে। তাকে উদ্ধার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।”