অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তামান্না ফারাহ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
র্যাবের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি খায়রুল ইসলাম বলেন, “আজ (মঙ্গলবার) সকালে গ্রেপ্তারকৃত এপিবিএনের তিন সদস্যকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ শুনানি শেষে প্রত্যেককে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।”
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কক্সবাজার ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-পরিদর্শক শাহাজাহান, কনস্টেবল রাজিব ও আব্দুল্লাহ। এরা তিনজনই ৩১ জুলাই রাতে শামলাপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে দায়িত্বরত ছিলেন। তাদের যে কোনো সময় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান র্যাব কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম।
এর আগে সোমবার (১৭ আগস্ট) রাতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। র্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কক্সবাজার ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-পরিদর্শক শাহাজাহান, কনস্টেবল রাজিব ও আব্দুল্লাহ। এরা তিনজনই ৩১ জুলাই রাতে শামলাপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে দায়িত্বরত ছিলেন।
আশিক বিল্লাহ আরও জানান, “সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত অনেক দূর এগিয়েছে। আজ (১৮ আগস্ট) মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কারাগারে থাকা রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও নন্দ দুলাল রক্ষিতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
এদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, “আজ (মঙ্গলবার) ওসি প্রদীপকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা ছিল। কিন্তু, র্যাবের একটিদল ওসি প্রদীপ সহ তিনজনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে। একইভাবে ওসি প্রদীপকে আমরাও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারাগারে পৌঁছেছি। যেহেতু ওসি প্রদীপকে আমাদেরও জিজ্ঞাসাবাদেও প্রয়োজন ছিল, সেহেতু পুরো বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি অবহিত করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এর আগে গতাল সোমবার র্যাবের প্রেসব্রিফিংয়ে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান আশিক বিল্লাহ জানিয়েছেন, ওসি প্রদীপ কুমার সহ তিনজনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব হেফাজতে নেওয়া হবে। একই সাথে ঘটনার মুল সাক্ষী শিপ্রা ও সিফাতের কম্পিউটার ডিভাইস সহ ২৯টি সামগ্রী কক্সবাজারের রামু থানায় পুলিশের হেফাজতে জিডি মূলে রক্ষিত আছে। আমরা তদন্তকারী কর্মকর্তা বিজ্ঞ আদালতে মাধ্যম উক্ত সরাঞ্জামাধি র্যাব হেফাজতে নেওয়া হবে। কারণ, মামলার তদন্তের স্বার্থে উক্ত কম্পিউটার ডিভাইস গুরুত্বপূর্ণ কাজ দেবে জানান তিনি।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। পরে রিসোর্ট থেকে শিপ্রাকে আটক করা হয়। দুজনই বর্তমানে জামিনে মুক্ত। ওই ঘটনায় ওসি প্রদীপসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা এবং পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছে। তাদের মধ্যে চার পুলিশ সদস্য ও তিন সাক্ষীকে রিমান্ড শুনানি করছে তদন্তকারী সংস্থা র্যাব।