আমি একজন শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। লিপ রিডিং এরমাধ্যমে যোগাযোগ করে স্নাতক চতুর্থ বর্ষে পড়ছি আমি। বাবা-মা, দুইভাই ও দুইবোন নিয়ে বর্তমানে ঢাকায় আছি। আমি পরিবারে সবার বড়। আমার বাবা কোভিড-১৯ এর কারণে বর্তমানে বেকার। মাঝেমধ্যে ফসল বিক্রি করে এবং আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তায় বর্তমানে আমাদের সংসার চলছে।
জন্মের দেড় বছর বয়সে আমার নিউমোনিয়া হয়।এরপর দুবছর বয়সে ডক্টর দেখানো হলে সেখান থেকে বলা হয় আমার শ্রবণ ক্ষমতা কমে গিয়েছে,তবে ভালো হিয়ারিং এইড দিলে শুনতে এবং কথা বলতে পারবো। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন এখনকার মত এত সুযোগ ছিলনা। এখন যেমন পাঁচ বছরের শিশুদের বিনামূল্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ থেকে ককলিয়ারইম্প্ল্যান্ট চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বিনামূল্যে চিকিৎসার এই বিষয়টা অনেকেই জানেনা। বিষয়টি নিয়ে সর্বস্তরে প্রচারণা দরকার। এক্ষেত্রে স্থানীয় সমাজসেবা অফিস ও এলাকাভিত্তিক ডিপিও সংগঠনগুলো তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমার মতে শিশুর শ্রবণপ্রতিবন্ধিতা ধরা পড়ার সাথে সাথেই সরকারিভাবে তাদের বিনামূল্যে শ্রবণ যন্ত্র সরবরাহের ব্যবস্থা করা গেলে অনেক দরিদ্র পরিবাররের ওপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ কমে যাবে।
এসডজি ৩.৮.১ এ উল্লেখ আছে“অত্যাবশ্যকীয় স্বাস্হ্যসেবার পরিধি (সাধারণ ও সবচাইতে সুবিধাবঞ্চিত ও দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রজননসংক্রান্ত,মাতৃত্বজনিত,নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য, সংক্রামক ও অসংক্রামক ব্যাধি এবং সেবা সক্ষমতা ও সুবিধায় অধিকারসহ ট্রেসার ইন্টারভেশনের ভিত্তিতে অত্যাবশ্যকীয় সেবার গড় আওতা হিসেবে সংজ্ঞায়িত।)
যা একজন শিশু হিসেবে শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুর অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনীয় স্বাস্হ্যসেবার মান গুরুত্ব সহকারে নিশ্চিত করছে।
আরও পড়ুন- জেন্ডার সমতা ছাড়াই উন্নতি?
ধানমন্ডি হাইকেয়ারে বর্ণমালা শেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের থেরাপি পেয়েছি। পাশাপাশি আমার মাকেও ট্রেনিং দেওয়া হয়। চার বছর বয়সে আমি একটু একটু কথা বলতে শিখি।পরে সেই সেন্টারের পরামর্শে একটি স্কুলে নার্সারিতে ভর্তি হই। প্রথমে প্রতিবন্ধী মেয়ে হিসেবে আমার সাথে কথা বলতে বা যোগাযোগের সমস্যা হতে পারে এই অভিযোগে তারা আমার প্রতিভা বিকাশের সুযোগকে মূল্যায়ন করতে চায়নি। পরে মায়ের অনুরোধে আমাকে ভর্তি করানো সম্ভব হয়।
যদিও এসডিজি -৪ এর লক্ষ্যে বলা আছে, "সকলের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবংসমতাভিত্তিক গুনগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টির কথা বলা আছে"।
কিন্তু শুনতে না পারা এবং স্পষ্ট উচ্চারণের সমস্যার কারণে কাউকে বুঝাতেও পারতাম না। স্কুলে অনেক সময় শ্রেণীশিক্ষকের কথাশুনতে পেতামনা এবং শিক্ষকের অনেক প্রশ্নের জবাব দিতে পারতাম না। এজন্য আমাকে শিক্ষকদের অনেক তিরষ্কার শুনতে হয়েছে।পড়া বলতে না পারার কারণে আমাকে ক্লাস থেকে বেশ কয়েকবার বের করে দেয়া হয়েছে। ঐসময়ে আমার অনেক খারাপ লাগতো।কান্না পেত। আমার মতে এই ধরনের অনাহূত ঘটনা প্রতিহত করা সম্ভব যদি স্কুল কমিটিতে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য একজন প্রতিনিধি থাকে।
এসডিজি -৪.কএ ও উল্লেখ রয়েছে,"শিশু,প্রতিবন্ধিতা ওজেন্ডারসংবেদনশীল শিক্ষা সুবিধার নির্মাণ ও মানোন্নয়ন এবং সকলের জন্য নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ওকার্যকর শিক্ষার পরিবেশ প্রদান করা।"
যা জাতীয় পর্যায়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রবেশগম্যতা এবংউপযোগিতা নিশ্চিত করে। যদি শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা ইশারা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় এবংশ্রেণিকক্ষে ছাত্র/ছাত্রী বা সহপাঠীকে আমার মতো শিক্ষার্থীর জন্য সহায়ক হিসেবে ব্যবস্থা করা হয় তাহলে তারা শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ ও শিখতে সাহায্য করবে। কিন্তু বাস্তবজীবনে আমি সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থার মুখোমুখি হয়েছি।
আমাকে স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।পরে আমার মায়ের অনুরোধে সুযোগ দেওয়া হয় এবং দৌড় প্রতিযোগিতায় আমি প্রথম হই। মায়ের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে ক্লাসের সমস্ত পরীক্ষায় প্রথম হতে শুরু করি। তখনও অন্যান্য শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকেরা আমার দিকে তীর্যক ভঙ্গিতে তাকাতো। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরাও যে উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ভাল ফলাফল করতে পারে এটা তারা মানতে নারাজ। স্কুল জীবনটা কোন বন্ধু ছাড়াই পার করতে হয়েছে।অষ্টম শ্রেণিতে কেবলমাত্র আমিই একমাত্র ছাত্রী যে সৃজনশীল গণিতপ্রশ্নপত্রে পাস করেছিলাম। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আমার প্রতি বিতৃষ্ণা যেন আরও বেড়ে গেল। সহপাঠীরা আরও দূরে সরে গেল। আমার মতে যারা সরকার ওবেসরকারি পর্যায়ে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করে তারা যদি স্কুল-কলেজগুলোর শিক্ষক-শ্রেণীশিক্ষার্থীদের নিয়ে সেমিনার বা আলোচনার আয়োজন করা। নবম শ্রেণিতে আমি বিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার শিক্ষকরা কেবলমাত্র প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী হওয়ার কারণে আমাকে বিজ্ঞান নিতে দেন নি। বাধ্য হয়ে বাণিজ্য বিভাগে পড়াশোনা করেছি। ২০১৩সালে এসএসসি এবং ২০১৫সালে এইচএসসি একইশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এ গ্রেড নিয়ে পাস করেছি। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে বিষয় বাছাইকরণের সুযোগ আমাকে দেওয়া হয়নি।
অনার্স পড়ার উদ্দেশ্যে কলেজে আমার প্রতিবন্ধিতা পরিচয়পত্রস হসমস্তনথিপত্র জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু কলেজের প্রশাসনের একজন কর্মচারী আমার সামনে প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্রের নথিটি ছিঁড়ে ফেলে আমাকে অপমান করে বের করে দেয়।ভর্তি পরীক্ষাও অংশ নেওয়াতো বহুদূরের কথা। এই ঘটনা আমার মনে অনেক বড় দাগ কেটেছিল যারকারণে পরবর্তীতে এইপরিচয়পত্রটি আর কোনও কর্তৃপক্ষকে দেইনি। আমার মতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফর্মেশন ডেস্কে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সহায়ক লোক থাকাখুবই প্রয়োজন। পরবর্তীতে প্রতিবন্ধী আইডি কার্ড জমা না দিয়ে আমি কলেজের ডিগ্রিতে ভর্তি হই।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি ও প্রতিকূলতা
কিন্তু ডিগ্রিতে নিয়মিত ক্লাস না হওয়ায় পড়াশোনার পরিবেশটা ভালো লাগছিল না। তাই আমি আবার ২০১৬ সালে আরেকটি কলেজের অ্যাকাউন্টিংয়ে ভর্তির জন্য সমস্ত কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম এবং এবারও আমি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি পরিচয়পত্র জমা দেইনি।পরে আমি অ্যাকাউন্টিংয়ে মেধাতালিকায় ১৫তমস্থান অর্জন করে এখানে ভর্তি হই।বেসরকারি এইকলেজে ভর্তির পর আমাকে আগের মতোই শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অবহেলা ও কটূ কথা সহ্য করতে হয়েছিল।
কিন্তু প্রথম এবং দ্বিতী বর্ষে অনার্সে প্রথমস্থান অর্জনের ফলস্বরূপ আমার প্রতি শিক্ষকদের মনোভাব কিছুটা বদলায়। তবে শুধু শিক্ষা ক্ষেত্রে নয় ছোটবেলা থেকে আমার নিকট আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীদের কাছ থেকেও শুনতে হয়েছিল যে প্রতিবন্ধী মেয়েকে শিক্ষিত করতে অর্থ অপচয় করে লাভটা কি।তাছাড়া যোগ্যতা প্রমাণের আগে প্রতিবন্ধিতার বিষয়ে জানলে সবাই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পরিমাপ করতে শুরু করে।
যদিও এসডিজি-৪.৫-এ উল্লেখ আছে “অরক্ষিত জনগোষ্ঠীসহ প্রতিবনধী জনগোষ্ঠী, নৃ জনগোষ্ঠী ও অরক্ষিত পরিস্হিতির মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের সকল পর্যায়ে সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং শিক্ষায় নার-পুরুষ বৈষম্যের অবসান ঘটানো।”
বর্তমানে কোভিড -১৯ পরিস্থিতিতে অনলাইনে জুম ক্লাসগুলি আমার জীবনে শিক্ষা অর্জনের সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাসায় ইন্টারনেটের অভাবে সহপাঠীর বাড়িতে গিয়ে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু আমি ভালোভাবে বুঝতে পারছিলাম না।সহপাঠীর কাছে এ বিষয়ে সাহায্য চাইলে প্রচণ্ড বিরক্ত হয়। এখনও আমি আমার জীবনে বন্ধুর অনুপস্থিতি প্রবলভাবে অনুভব করি।
অনলাইন ক্লাসগুলো আমাদের শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষের উপযোগী নয়। তাছাড়া অন্যরাও বাংলা ইশারা ভাষা ব্যবহারে আগ্রহী না। যদি প্রয়োজনীয় বাংলা ইশারা ভাষার শব্দগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর বা ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা যায় তাহলে আমাদের কিছুটা উপকার হবে।
আরও পড়ুন- টেকসই স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ
আমি তৃতীয়, সপ্তম ও নবমশ্রেণীতে পড়ার সময় বেশ কয়েকবার যৌন হয়রানির শিকার হই কিন্তু কেউ এর প্রতিবাদ বা সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। এছাড়া খুব অল্প বয়স থেকেই রাস্তায় ছেলেদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছি। পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ করার কোন উপায়নেই কারণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব থানা আমাদের দেশে নেই।
যদিও এসডিজি -৫.২-এ"পাচার, যৌন হয়রানি ও অন্যসবধরণের শোষণ-বঞ্চনাসহ ঘরে বাইরে সকল নারীও মেয়ের বিরুদ্ধে সকল ধরনের সহিংসতার অবসান" যা বিশেষত বেসরকারিও সরকারি পর্যায়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি শিক্ষার পরিবেশেরক্ষেত্রে নেতিবাচক মনোভাবদূরীকরণ নিশ্চিত করবে।
অন্যদিকে পরিবার থেকেও এসব বিষয়ে কথা বলতে নিষেধ করা হয় আমাকে। আমাদের দেশে প্রতিবন্ধী নারী হয়রানির কোন সুষ্ঠুবিচার হয়না। এমনকি প্রতিবন্ধী নারীদের সহিংসতা কত পার্সেন্ট বা এর ন্যায়-বিচার এর পরিমাণ কতটুকু এর সুষ্ঠ কোন তথ্য সরকারি পর্যায়ে নেই।
বর্তমানে পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিবন্ধী মানুষের সংস্থা কৃষ্টিতে সহযোগি অ্যাকাউন্টেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে পার্টটাইম চাকরি করছি। এছাড়া কলেজে পড়াকালীন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকারের প্রচারে নিজেকে নিযুক্ত করার জন্য ডিপিওগুলোর সাথে যুক্ত থাকার চেষ্টা করেছি।চারমাস বি-স্ক্যানে শিক্ষানবিশ হিসাবে কাজ করার পরে বি-স্ক্যানের সাধারণ সদস্যপদে যুক্ত হয়েছি।
আমি বি-স্ক্যান ছাড়াও শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষের সংগঠন এসডিএস, এলওডিপিও নেটওয়ার্ক, পিএনএসপি থেকে বিভিন্ন সমর্থন পেয়েছি যা আমার পরিবারে আর্থিক অবদান রাখতে সহায়তা করেছে।শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হওয়ার পরেও আমি কোনও প্রতিবন্ধী ভাতা পাই না। প্রতিবন্ধী ছাত্রীহিসাবে কোন উপবৃত্তিতে ও নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারিনি এখনও। এর কারণ প্রথমত সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ফর্ম এনে পূরণ করাও কলেজ থেকে সমর্থন পাওয়াটা বেশ কঠিন।
আরও পড়ুন- সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের সম্পৃক্তকরণ
অনেকক্ষেত্রে কলেজ অনুমতি দিতে চায় না আবার সমাজসেবার লাল ফিতার চক্রের কারণে অনেকসময় লাগে। এই ভাতা ফরমপূরণ এবং জমা দেওয়াটা অনলাইনের মাধ্যমে করার ব্যবস্থা করা দরকার যেমন চাকরির জন্য প্রতিবন্ধী মানুষরা অনলাইন থেকেই আবেদন করছে।
ভবিষ্যতে সফল ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন দেখি আমি। হয়তো কর্মজীবনেও নেতিবাচক পরিস্হিতির সম্মুখীন হতে হবে। আদৌ স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে কিনা জানি না।এই বৈষম্যদূরীকরণে আমার পরামর্শ হলো সরকারি ডাটাবেসে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অবস্থান এবং তাদের বর্তমানঅবস্থা সম্পর্কে সাময়িকী সংক্ষিপ্ত গবেষণা।সিদ্ধান্তগ্রহণ কমিটিগুলোতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বিশেষ প্রতিবন্ধী নারীদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধিকরণ এবং তাদের মধ্যে যাদের প্রতিবন্ধী মানুষেরকণ্ঠস্বর হয়ে কথা বলতে পারবে এমন মানুষকে অন্তর্ভুক্তকরণ নিশ্চিত করা। এটি এসডিজি১০.২-তেও বলা আছে,"বয়স, লিঙ্গ, প্রতিবন্ধীতা, জাতিসত্ত্বা, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়, উৎস (জন্মস্থান) ধর্ম অথবা অর্থনৈতিক বা অন্যান্য
অবস্থা নির্বিশেষে ২০৩০ সালের মধ্যে সকলের ক্ষমতায়ন এদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তির প্রবর্ধন" যা প্রতিবন্ধী মানুষের অন্তর্ভুক্তিএবং অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করবে।
এসডিজি বলছে “লিভ নো ওয়ান বিহাইন্ড”। কাউকে পেছনে রেখে নয়।কিন্তু এ পর্যন্ত আমার জীবনযাত্রা পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে শিশু বয়স থেকে সর্বস্তরে আমাকে বাদ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এবং বাধা দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র শ্রবণ প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে।
কিন্তু আমার সাহসী মায়ের অদম্য ইচ্ছের কারণে প্রতিবারই সব বাধা পেরিয়ে সবার আগে এগিয়ে চলেছি আমি।আমার প্রশ্ন এদেশের সব শ্রবণ প্রতিবন্ধী নারী বিশেষত বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী শিশু, কিশোর, তরুণ অথবা ব্যক্তি নির্বিশেষে সবাইকি পরিবার, সমাজও রাষ্ট্রের এই হাজারও বাধার দেয়াল ডিঙ্গিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারে? এর দায়ভার তাহলে কার?
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর সঙ্গে বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে বিশেষ এ প্রতিবেদনটি প্রকাশিত