ঠাকুরগাঁওয়ে আখের অভাবে বন্ধ হবার উপক্রম সুগার মিল চালু রাখতে শেষমেশ কর্মকর্তা-কর্মচারিরা নিজেরাই আখ চাষে নেমে পড়েছেন। মিল ও নিজেদের চাকুরি রক্ষায় প্রায় ৬’শ একর জমিতে চলছে তাদের এই কার্যক্রম।
শ্রমিক-কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে, গত চারমাস ধরে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। জীবনের তাগিদে মিল চালু রাখার জন্য আখ সংকট দুরীকরণ ও চিনি আহরণের হার বাড়াতে এছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না তাদের।
অন্যদিকে, আখ চাষীরা বলছেন, সময়মতো টাকা পরিশোধ না করা এবং মিল সার ও কীটনাশক সরবরাহে মিল কর্তৃপক্ষ দেরি করায় তাদের নানা ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে যার ফলে দিন দিন আখের আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা।
এদিকে মিল কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জমি না থাকায়, জমি ভাড়া করে আখ চাষ করছে চিনি কলের শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তারা। মিল কর্তৃপক্ষের আদেশে জীবনের তাগিদে মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা আখ চাষে নেমে পড়লেও আখ ক্ষেতের পরিচর্যা ও মানসম্মত আখ উৎপাদন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও চিনিকল ব্যববস্থাপনার পরিচালক আব্দুস শাহীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মিলের উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়ায় বেতন - ভাতা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে’। তবে, এসময় তিনি আখ চাষীদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আখচাষের জন্য কৃষি উপকরণ ও ঋণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে’।
এদিকে, প্রয়োজনীয় উপকরণ না পাওয়ায় আখ চাষীরা উৎসাহ হারিয়ে আখের জমিতে গম-ভুট্টা, সবজিসহ লাভজনক ফসল ও ফলমুল চাষ করছেন বলে জানান ২৯ মাইল আখ ক্রয়কেন্দ্রের আখ চাষি রুহুল আমিন।
আখ চাষীদের আগ্রহ হারানোর কথাটি স্বীকার করে মিলের জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, ‘এবার আখ সংকট মোকাবিলায় ৮ হাজার একর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও আবাদ হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার একর জমিতে’।
উল্লেখ্য, গেল মৌসুমে ১লাখ ৩ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও মাড়াই হয় সাড়ে ৮৪ হাজার মেট্রিকটন আখ। এই পরিমান আখ থেকে উৎপাদিত ৪ হাজার মেট্রিকটন চিনি অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে থাকায় চরম অর্থ-সংকটের মুখে পড়ে চিনিকলটি।