দেশে মাঝে কিছুদিন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমলেও শীতে বাড়তে পারে বলে সবাইকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শীত নামার ঠিক আগে কয়েকদিন ধরে শনাক্ত রোগী বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে বুধবার (১৮ নভেম্বর) সংসদে প্রশ্নোত্তরে বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে এই সতর্কবার্তা দেন তিনি।
স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরার সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্ব, সময়োচিত সিদ্ধান্ত ও দক্ষ ব্যবস্থাপনায় এখন র্পযন্ত কোভিড-১৯ বিশ্ব মহামারিকে সফলভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব হয়ছে।”
তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর প্রকোপ কিছুটা কমে এলেও তা আসন্ন শীতকালে আবার বেড়ে যাবে পারে বলে বিশেষজ্ঞগণ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।”
শীতে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কায় সরকার ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছে। ঘরের বাইরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালতও নামানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, আসন্ন শীত মৌসুমে সংক্রমণ যাতে বাড়তে না পারে, সেজন্য “নো মাস্ক, নো সার্ভিস” নীতি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সারাদেশের পয়েন্ট অব এন্ট্রিসমূহে আসা যাত্রীদের স্ক্যানিং অব্যাহত রয়েছে। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
জরুরি ভিত্তিতে টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ৩ কোটি ভ্যাকসিন আমদানির লক্ষ্যে গত ৫ নভেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
মহামারিকালে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে জরুরি আপৎকালীন অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে পারার কথাও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ৩৫ বিলিয়ন ইয়েন বা ৩৩ কোটি মার্কিন ডলার আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে জাপান, যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। এডিবি প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ ও অনুদান দিয়েছে।
করোনাভাইরাসের টিকাসহ জরুরি চিকিৎসাসামগ্রী কিনতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে, যার আওতায় সংস্থাটি থেকে ৩০ লাখ ডলার অনুদান পাওয়া যাবে।
এছাড়া, বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশকে ১০৫ কোটি ডলার দিচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে তৈরি পোশাক খাতের জন্য ১১০ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা পাওয়া গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জার্মানির কাছ থেকে তৈরি পোশাক ও চামড়া শিল্পের জন্য ১১৩ মিলিয়ন ইউরোর প্রতিশ্রুতি মিলেছে। এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) বাংলাদেশের জন্য ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে।