করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার আগামী বছরের জানুয়ারির শেষের দিকে দেশে টিকা আনার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, “আশাকরি, আগামী জানুয়ারির শেষের দিকে ভ্যাকসিন আনতে পারব। কোনো কারণে দেরি হলেও ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অবশ্যই ভ্যাকসিন আনতে পারব। এ ব্যাপারে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।”
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে অনেক বড় বড় দেশে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে সবকিছু ঠিকঠাক মতো চলছে। আমেরিকা অর্থনীতিতে ১৫ ভাগ এবং ভারত সাত ভাগ পিছিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে উন্নয়নের চাকা ঘুরছে বলেই আমরা পাঁচ ভাগ এগিয়েছি।”
তিনি দাবি করেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলা এবং নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিভাগের নেয়া পদক্ষেপ সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে।
জাহিদ মালেক আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের ৬৪ জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। দেশে ৩৮ মেডিকেল কলেজ স্থাপনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন।
জেলা পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান, জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, মানিকগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. রমজান আলী প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
করোনাভাইরাস রোধে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি তিন কোটি ডোজ টিকা আনতে ৫ নভেম্বর ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের সাথে সমঝোতা স্মারক সই করে বাংলাদেশ সরকার।
সমঝোতা অনুযায়ী, বেক্সিমকোকে অক্সফোর্ডের তৈরি সার্স-কোভ-২ এজেডডি ১২২২ (অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা) সরবরাহ করবে সিরাম ইনস্টিটিউট।
রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে কোভিড-১৯ টিকা সংগ্রহের জন্য গত ২ ডিসেম্বর একটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
কোভিড-১৯ টিকা ক্রয়ের জন্য অর্থমন্ত্রণালয় গত ১৬ নভেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ৭৩৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়।