টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে চোর সন্দেহে সন্ধ্যা রানী (৩৫) নামে এক আদিবাসী নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত ৩ জানুয়ারি উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের মালিরচালা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গত রবিবার (১০ জানুয়ারি) রাতে নির্যাতনের শিকার নারী বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, নির্যাতিত সন্ধ্যা রানী দুই ছেলে ও এক মেয়ে জননী। তার ছোট ছেলে পলাশ একই গ্রামের মনিরুল ইসলাম ভূইয়ার পরিবারের ছেলে-মেয়েদের সাথে প্রায়ই খেলা করতো। ঘটনার ১৫ দিন আগে পলাশ মনিরুল ভূইয়ার বাড়ি থেকে ঘুড়ি বানানোর জন্য খবরের কাগজ নিয়ে যায় এবং ঘুড়ি বানিয়ে মনিরুলের সন্তানদের সঙ্গে ঘুড়ি ওড়ায়।
হঠাৎ মনিরুলের বাড়ি থেকে স্বর্ণ ও টাকাসহ মূল্যবান কাগজপত্র চুরি হয়। এ ঘটনার জের ধরে ৩ জানুয়ারি শিশু পলাশকে বাড়িতে ধরে নিয়ে মনিরুল ও তার পরিবারের সদস্যরা মারধর করে এবং মালামাল চুরি করে মা সন্ধ্যা রানীর কাছে জমা দেওয়ার স্বীকারোক্তি আদায় করে।
পরে গত শনিবার (৯ জানুয়ারি) মনিরুলের দুই বোন খুকি ও সুমি আক্তার সন্ধ্যা রানীর বাড়ি গিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তারা সন্ধ্যা রানীকে বাড়ির পাশের করিম ভূইয়ার আকাশমনি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। এ সময় মনিরুল ভূইয়া, তার ছেলে মোস্তফা ও দুই বোন খুকি ও সুমি মিলে সন্ধ্যা রানীকে এলোপাথাড়ি মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
মামলার আসামির মোস্তফা ভূইয়া বলেন, “আমার ছোট বোনের গহনা চুরি করেছে সন্ধ্যা রানীর ছেলে পলাশ। সে চুরি করা গহনা তার মায়ের কাছে জমা দিয়েছে। বারবার চাইলেও তারা দেয় না। তাই আমার ছোট বোন সুমি সন্ধ্যা রানীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। আমরা কিছু জানি না।”
প্রত্যেক্ষদর্শী মহানন্দ চন্দ্র বর্মন বলেন, “ঘটনার দিন সন্ধ্যা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা সন্ধ্যা রানীকে বেঁধে রাখা হয়। এ সময় ক্ষুধায় তার ৬ মাসের শিশু সন্তান কান্না করলেও দুধও খেতে দেয়নি তারা। পরে আমি দুই বন্ধুর সহযোগিতায় সন্ধ্যা রানীকে উদ্ধার করি। বর্তমানে সে আমার বাড়িতে আছেন।”
এ ব্যাপারে ঘাটাইল থানার ওসি (তদন্ত) ছাইফুল ইসলাম বলেন, “মামলার তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”