Thursday, March 27, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

‘বিশ্বব্যাংকের পরিবেশ প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গ নয়’

‘বিশ্বব্যাংক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটি বাংলাদেশের প্রকৃত পরিবেশ দূষণের আংশিক চিত্র।’

আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:১৯ পিএম

সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পরিবেশ বিষয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা পূর্ণাঙ্গ নয় বলে মন্তব্য করেছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)। শুক্রবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে পবা কার্যালয়ে ‘বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ পরিবেশ সমীক্ষা এবং আমাদের করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। 

গত ১৬ সেপ্টেম্বর ‘বাংলাদেশ পরিবেশ সমীক্ষা ২০১৮’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।

বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদন সম্পর্কে পবা জানিয়েছে, ‘বিশ্বব্যাংক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেটি বাংলাদেশের প্রকৃত পরিবেশ দূষণের আংশিক চিত্র। প্রতিবেদনে দেখা যায়, পরিবেশগত বিপর্যয় ও দূষণজনিত মৃত্যুর দিক থেকে উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। এই সমীক্ষার উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, কেবল পরিবেশ দূষণের কারণে ২০১৫ সালে দেশের শহরাঞ্চলে ৮০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। শহর অঞ্চলে দূষণের কারণে প্রতিবছর ক্ষতি হচ্ছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা। বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষার প্রধান সূচক ছিল শহরের বাতাসে ক্ষুদ্রকণা, ঘরের ভেতরে বায়ুদূষণের মাত্রা, পানিদূষণ, স্যানিটেশন ও কর্মক্ষেত্রে দূষণ। বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষার প্রধান বিষয় ছিল শহরের দূষণ। পরিবেশ দূষণের কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে সেটি পরিমাপ করতে গিয়ে বিশ্বব্যাংক পাঁচটি সূচক ব্যবহার করেছে। খাদ্যদূষণ, শব্দদূষণ, ভূমিদূষণ এবং ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক দূষণের কোনও হিসাব যোগ করেনি তারা। যোগ করেনি বন ধ্বংস ও কৃষিজমি কমে যাওয়ার তথ্য। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এসব দূষণ মানুষকে শারীরিক, মানসিক এবং মনোদৈহিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’

বৈঠকের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান। তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায় পরিবেশগত বিপর্যয় ও দূষণজনিত মৃত্যুর দিক থেকে উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। জনজীবন, অর্থনীতি ও পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতির যে পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তা গা শিউরে ওঠার মতো। আমরা এসব বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি। উন্নয়ন শুধু জিডিপির প্রবৃদ্ধির অংকে নয়, পরিবেশসম্মত উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। এজন্য দেশকে কী পরিমাণ খেসারত দিতে হচ্ছে তারও কিছু নমুনা তুলে ধরা হয়েছে। আমরা মনে করি বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে বরফখণ্ডের ভাসমান অংশের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।”

বেশ কিছু বিষয়ও সুপারিশ করেছে পবা। সুপারিশগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিল্প, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিক্ষা, বাণিজ্য, উন্নয়ন, অবকাঠামো নির্মাণসহ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য ও দর্শন হবে পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থানতন্ত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, পরিবেশ ও মানববান্ধব ধারা অনুসরণ করা। বায়ু, পানি, শব্দ, খাদ্য, স্যানেটারি ও ধুলাসহ অন্যান্য দূষণের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে একটি সমন্বিত কার্যক্রম হাতে নেওয়া। প্রতিটি শহরের দখল করা পার্ক, লেক, খাল, কালভার্ট, নদী, খেলার মাঠ, ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করা।

গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পবা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী।


   

About

Popular Links

x