‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড-২০১৮’ আইনের চূড়ান্ত খসড়ায় মাদ্রাসা শিক্ষকদের রাজনীতিতে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এই বিধিনিষেধের ফলে কোনও ধরনের রাজনীতিতে মাদ্রাসা শিক্ষকরা অংশ নিতে পারবেন না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ চূড়ান্ত খসড়াটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে।
ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে বেতন কাঠামোর আওতায় নেওয়ার উদ্যোগের পর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন সরকার স্বীকৃত সব স্তরের মাদ্রাসা শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধ করা হচ্ছে। এর আগে বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য আইনি এই বাধ্যবাধকতা ছিল না। এই প্রথম বেসরকারি শিক্ষকদের রাজনীতি করার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা আনা হচ্ছে। এছাড়া নতুন আইনে সরকার স্বীকৃত ইসলামি শাস্ত্র শিক্ষা ও চর্চার জন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও রাজনীতি করতে পারবেন না।
মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাদ্রাসা) রওনক মাহমুদ বলেন, ‘১৯৭৮ সালের মাদ্রাসা শিক্ষা অর্ডিনেন্সকে আইনে রুপান্তরের পাশাপাশি তা যুগোপযোগী করা হচ্ছে। চূড়ান্ত খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য।’
প্রস্তাবিত আইনে সরকার স্বীকৃত ধর্মীয় শিক্ষা ও চর্চার জন্য প্রতিষ্ঠান, ফোরকানিয়া মাদ্রাসা, ইবতেদায়ি মাদ্রাসা, দাখিল মাদ্রাসা ও আলিম মাদ্রাসার শিক্ষকদের রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা আরোপ হয়েছে। অন্যদিকে, ফোরকানিয়া ও ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে প্রাথমিক শিক্ষার সমমান নির্ধারণ করা হয়।
রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা আরোপ করে প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়- এসব মাদ্রাসার কোনও শিক্ষক রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশ নিতে, যোগ দিতে ও সহায়তা করতে পারবেন না। সরকারের বিরুদ্ধে কোনও প্রকার গণঅসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারবেন না। জনগণের বিভিন্ন অংশের মধ্যে শত্রুতা বা বিভেদ সৃষ্টি হয়, কিংবা জনশান্তি নষ্ট হয়; বিঘ্নিত হয়— এমন কোনও কাজে জড়িত হতে পারবেন না। কোনও শিক্ষক ও কর্মচারী স্থানীয় সরকার পদ্ধতির কোনও নির্বাচনি প্রচারণায়ও অংশ নিতে পারবেন না। নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টি কিংবা প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। কেউ এই শর্ত ভঙ্গ করলে চাকরিচ্যুতসহ শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে সরকার।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন