কোভিড-১৯ মহামারির বাস্তবতায় ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে বিনম্র শ্রদ্ধা, যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে ভাষা শহীদদের স্মরণের মাধ্যমে রবিবার “মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” পালন করেছে জাতি।
ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়েই শুরু হয় বাঙালির শ্রদ্ধা জানানোর পর্ব। রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে, আওয়ামী লীগ সভাপতির পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী ও কর্নেল (অব) ফারুক খান, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল উপস্থিত ছিলেন।
পূর্ব পাকিস্তানে রাষ্ট্রভাষা বাংলাকে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য যারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন সেসব ভাষা আন্দোলনের বীরদের ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে খালি পায়ে হেঁটে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফুল দিয়ে “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি” গানে গানে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে। শুধু ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেই নয়, দেশব্যাপী শহীদ মিনারগুলোতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাংলা ভাষাকে জাতীয় ভাষা হিসাবে অস্বীকার করে এবং পাকিস্তানের একমাত্র সরকারি ভাষা হিসেবে ঊর্দুকে চাপিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও ঢাকার সাধারণ মানুষ রাজপথে নেমে আসে।
১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলাকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি মিছিল বের হয়। এসময় পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরও কয়েকজন নিহত হন।