রাজশাহী থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
সোমবার (১ মার্চ) থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে জেলাটিতে। হঠাৎ করে বাস বন্ধ হওয়ায় গন্তব্যে যেতে পারছেন না মানুষ। বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে জেলাটিতে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি দলটির নেতাকর্মীদের।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারনপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক রাসিক মেয়র ও সাংসদ মিজানুর রহমান মিনু বলেন, সোমবার থেকে রাজশাহী অভিমুখে সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পূর্বেও রাজশাহীর বিভাগীয় সমাবেশ করার আগে এই রকম অবস্থা হলেও মাদ্রাসা মাঠ জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিলো। এবারও এর ব্যতিক্রম হবেনা। এসময় জনগণ রাজশাহীর এই সমাবেশে আসবেন বলে আশাব্যক্ত করেন তিনি।
রাজশাহী নগরীর বাস কাউন্টারগুলোতে দেখা যায়, প্রতিটি কাউন্টার শাটার ফেলা। বাস বন্ধ জানার পরও কিছু গাড়ি চলতে পারে এমনটা ভেবে অনেকে কাউন্টারে যাচ্ছেন। কিন্তু বাস না পেয়ে তারা ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে বাসের বিকল্প হিসাবে অন্য যানে করে যাচ্ছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। এজন্য তাদের বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে।
রাজশাহীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে কথা হয় ঢাকায় কর্মরত বেসরকারি একটি কোম্পানিতে চাকরি করা একজনের সঙ্গে। মিটিংয়ের জন্য তিনি গত রবিবার রাজশাহীতে আসেন। তিনি বলেন, মিটিংয়ের জন্য রবিবার রাজশাহীতে আসি। সোমবার রাতেই ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। সোমবার টার্মিনালে এসে বাস না পেয়ে ফিরে গিয়েছিলাম। আজও এসে দেখি বাস বন্ধ। উপায় না পেয়ে ফিরে যাচ্ছি। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে যদি বাস ছেড়ে দেয় তাহলে চলে যাবো। তার মতো অনেকেই বাসের জন্য কাউন্টারে এসে ফিরে যান। অনেকে বিকল্প যানে ভেঙে ভেঙে বেশি ভাড়ায় যাচ্ছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।
সোমবার বাস বন্ধের বিষয়ে রাজশাহীর পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা দাবি করেছিলেন, বাস চলাচল করলে হামলার আশঙ্কা আছে। তাই শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তারা বাস চলাচল আপাতত বন্ধ করে দিয়েছেন। পরিস্থিতি বুঝে পরে তারা আবারও বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত নেবেন।
রাজশাহী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেছিলেন, মঙ্গলবার রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে তারা সড়কে বিশৃঙ্খলা ও যানবাহনে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা করছেন। এ কারণে তারা সোমবার সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
তবে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন দাবি করেছেন, বগুড়ায় তাদের এক শ্রমিককে মারধর করা হয়েছে। মারধরকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
এদিকে শহরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, মনিচত্বর, সোনাদীঘি বা গণকপাড়া এলাকায় বিএনপির পক্ষ থেকে সমাবেশ করার অনুমতি চাইলেও তারা এসব এলাকায় সমাবেশের অনুমতি পায়নি। এর পরিবর্তে রাজশাহীর মাদ্রাসা ময়দান সংলগ্ন নাইস কনভেনশন সেন্টারে বিএনপিকে সমাবেশ করার কথা জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে, রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিএনপি একেবারেই মধ্য শহরের রাস্তায় সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু এসব এলাকায় সমাবেশ করলে মানুষের চলাচল বাধাগ্রস্ত হবে। তীব্র যানজট দেখা দেবে। এজন্য মধ্যশহরে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমরা বলেছি, ইনডোরে সমাবেশ করতে হবে। রাজশাহীর মাদরাসা ময়দান সংলগ্ন নাইস কনভেনশন সেন্টারে বিএনপিকে সমাবেশ করতে বলা হয়েছে।