জাতিসংঘের কোভ্যাক্স ভ্যাকসিন প্রজেক্টের আওতায় জুনের আগে বাংলাদেশ ১ কোটি ৯ লাখ ৮ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন পাচ্ছে। মঙ্গলবার (২ মার্চ) এ কথা জানিয়েছে কোভাক্স স্কিম।
দরিদ্র দেশগুলোতে করোনভাইরাসের টিকা পৌঁছানোর লক্ষ্যে এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ২৩ কোটি ৮২ লাখ ডোজ বিশ্বজুড়ে বিতরণ করা হবে।
টিকা গ্রহণের ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বাড়লেও, বেশিরভাগ টিকাই ধনী দেশগুলোতে সরবরাহ করা হয়েছে এবং অনেক দেশে এখন পর্যন্ত টিকার একটি ডোজও পৌঁছায়নি।
কোভাক্স প্রকল্পটি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সমগ্র বিশ্বে সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে। প্রথম চালানটি ৩১ মে নাগাদ ১৪১টি দেশ ও অঞ্চলে বিতরণ করার পরিকল্পনার একটি প্রাথমিক রূপরেখা প্রকাশ করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া প্রধান পাঁচটি গ্রাহক দেশ হিসেবে পাকিস্তান ১ কোটি ৪৬ লাখ ৪০ হাজার ডোজ, নাইজেরিয়া ১ কোটি ৩৬ লাখ ৫৬ হাজার ডোজ, ইন্দোনেশিয়া ১ কোটি ১৭ লাখ ৪ হাজার ৮০০ ডোজ, বাংলাদেশ ১ কোটি ৯ লাখ ৮ হাজার ডোজ এবং ব্রাজিল ৯১ লাখ ২২ হাজার ৪০০ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে।
একইভাবে ইথিওপিয়া ৭৬ লাখ ২০ হাজার, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ৫৯ লাখ ২৮ হাজার, মেক্সিকো ৫৫ লাখ ৩২ হাজার, মিশর ৪৩ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ এবং ভিয়েতনাম ৪১ লাখ ৭৬ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন পাবে।
ইরান, মিয়ানমার, কেনিয়া এবং উগান্ডা ৩০ লাখের বেশি ডোজ পাবার লাইনে রয়েছে।
সামগ্রিকভাবে মে মাসের শেষ দিকে, ভারত কোভাক্স ভ্যাকসিনের সবচেয়ে বড় প্রাপক হতে পারে, যদিও মঙ্গলবার বিতরণ তালিকা প্রকাশের আগ পর্যন্ত বরাদ্দ চূড়ান্ত হয়নি।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ টুভালু এই সময়ের মধ্যে ন্যূনতম ৪ হাজার ৮০০ ডোজ গ্রহণ করবে এবং নাউরু ও মোনাকো ৭ হাজার ২০০ ডোজ পাবে।
মহামারীর 'তীব্র পর্যায়ে' সমাপ্তি
কোভাক্স বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লুএইচও), গ্যাভি ভ্যাকসিন জোট এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপারেডনেস ইনোভেশনসের সহ-নেতৃত্বাধীন প্রকল্প।
এই প্রকল্পটির লক্ষ্য ছিল বছরের শেষ দিকে ৯২ শতাংশ দরিদ্র অর্থনীতির দেশের ২৭ শতাংশ জনসংখ্যাকে টিকা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন বিতরণ করা এবং কমপক্ষে ১০০ কোটি ৩০ লাখ ডোজ সরবরাহ করা।
গ্যাভির প্রধান নির্বাহী শেঠ বার্কলে বলেন, "কোভাক্সের লক্ষ্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মহামারির তীব্র পর্বের অবসান ঘটাতে সহায়তা করা।"
বিতরণের প্রথম ধাপে ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ায় উৎপাদিত অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের প্রায় ২৩৭ মিলিয়ন ডোজ এবং ফাইজার-বায়োএনটেক ভ্যাকসিনের আরও ১ দশমিক ২ মিলিয়ন ডোজ দেওয়া হবে।
ঘানা, আইভরি কোস্ট, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত এবং কলম্বিয়া ইতোমধ্যে কোভাক্সের মাধ্যমে ভ্যাকসিনগুলোর প্রথম চালান পেয়েছে।
নাইজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, কম্বোডিয়া মঙ্গলবার কোভাক্সের মাধ্যমে তাদের প্রথম ডোজ পেয়েছে, অপরদিকে ডিআর কঙ্গোও প্রথম চালানটি পেয়ে যাবে যে কোনো দিন।
বুধবার (৩ মার্চ) সেনেগাল তার প্রথম চালান পাচ্ছে এবং এই নিয়ে প্রায় ২০টি দেশ এ সপ্তাহে ভ্যাকসিনের চালান পাবে।