বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি গিনেস বুকে স্থান পাচ্ছে। আগের রেকর্ড ভঙ্গ ও প্রয়োজনীয় সকল শর্ত পূরণ হওয়ায় আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীতে এ ব্যাপারে ঘোষণা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুরে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের দুই প্রতিনিধি পরিদর্শন শেষে এ তথ্য দিয়েছেন।
জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ফুঁটে তুলতে গত ২৯ জানুয়ারি শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে (১২শ’ বর্গমিটার) চীন থেকে আনা গাড় বেগুনি রঙের হাইব্রিড ও দেশের গাঢ় সবুক ধানের চারা রোপণ করা হয়। এখন সেই চারাগুলো বড় হয়ে তাতে বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি দেখা যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের উদ্যোগে ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ার নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিকৃতির তৈরির কাজ শুরু করে। এটি তৈরি করতে গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৩০ জন নারী শ্রমিক কাজ করেছেন। তাদের সাথে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন পুরুষ শ্রমিক ছিলেন। এ শস্যচিত্রের জন্য স্থানীয় কৃষকদের কাছে সাত মাসের জন্য ১০০ বিঘা জমি ইজারা নেওয়া হয়েছে।
শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি পরিদর্শনে মঙ্গলবার গিনেস কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহম্মদ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরী বালেন্দা গ্রামের প্রকল্প এলাকায় যান। এ সময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ম. আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ড. কামাল উদ্দিন আহম্মদ জানান, তারা সাক্ষী হিসেবে পরিদর্শনে এসেছেন। কাজে সন্তোষ প্রকাশ করে কামাল উদ্দিন বলেন, “গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেতে সকল শর্ত পূরণ হয়েছে। চীনে শস্যচিত্র ছিল ৭৫ বিঘা জমিতে আর এখানে ১০০ বিঘা জমিতে।”
তিনি বলেন, “আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট দাখিল করা হবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে অর্থাৎ ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের আগেই শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পাবে।”
প্রকল্পটির ব্যবস্থাপক ও ন্যাশনাল এগ্রোকেয়ারের কর্মকর্তা কৃষিবিদ আসাদুজ্জামান বলেন, “শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলার মধ্যেই বিশ্বের সর্ববৃহৎ শস্যচিত্র
হিসেবে রেকর্ড গড়ার জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হয়। প্রতিনিধিরা পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।”
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও সম্মান জাগ্রত থাকবে। শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা জাতিকে উদ্ধুব্ধ করতে চাই। আগামী দিনে এ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন কর্মসূচিতে অনুপ্রেরণা জাগাবে।”
এ সময় বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুর রহমান দুলু, শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী শেখ, সহকারি কমিশনার (ভুমি) সাবরিনা শারমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।