মুক্তচিন্তা ও সংস্কৃতি চর্চার অভাবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ।
শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন সম্মানিত রাষ্ট্রপতি মহোদয়। বিকাল সাড়ে ৩টায় তিনি সমাবর্তন মঞ্চে আগমন করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আজকাল বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অসহিষ্ণুতা, উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের মতো নেতিবাচক কর্মকাণ্ড জাতি গভীর উদ্বেগের সাথে প্রত্যক্ষ করছে। আমি মনে করি, এর উদ্ভব ও বিকাশ হয়েছে, মুক্তচিন্তা ও সংস্কৃতি চর্চার অভাবে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জাতির অমিত শক্তি যুব সমাজ। যুব সমাজের শক্তি ও সম্ভবনাকে দেশ গঠনের কাজে লাগাতে আমাদের যুব সমাজকে অবশ্যই অপসংস্কৃতির প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীন চিন্তার অধিকারী হতে হবে। তাহলে আমরা লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবো। এ জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক, অভিভাবক, ছাত্রসংগঠনসহ সকলকে সম্মিলিতভাবে অবদান রাখতে হবে।’
গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তোমরা সবসময় নৈতিক মূল্যবোধ, বিবেক ও দেশপ্রেম জাগ্রত রাখবে। কখনো অন্যায় ও অসত্যের কাছে মাথা নত করবে না। মনে রাখতে হবে নিজেদের আত্মপরিচয়ের কথা, মাতৃতুল্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা, অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতার কথা, আমাদের প্রিয় দেশটির কথা ও ভুলবে না তোমাদের শেকড়ের কথা। কারণ শেকড় ভুলে কেউ বড় হতে পারে না।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সমাবর্তন শিক্ষার সমাপ্তি ঘোষণা করছে না, বরং উচ্চতর জ্ঞানভান্ডারে প্রবেশের দ্বার উন্মোচন করছে। তোমরা কেউ কেউ সে বিশাল জ্ঞান রাজ্যে অবগাহন করে বিশ্বকে আরও সমৃদ্ধ করবে।’
অনুষ্ঠানে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ও সেলিনা হোসেনকে ডক্টরেট ডিগ্রি অব লিটারেচার (ডি-লিট) প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আলমগীর মো. সিরাজুদ্দীন। অনুষ্ঠানে ছয় হাজার ১৪জনকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
সমাবর্তন মঞ্চে প্রবেশের আগে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ দুটি দশ তলা বিশিষ্ট আবাসিক হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।