প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঈদের দ্বিতীয় দিনেও ঘরমুখো মানুষের ভিড় মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাটে। তবে সকল ফেরি চলাচলের কারণে তেমন কোনো দুর্ভোগ ছাড়াই নদী পার হতে পারছে যাত্রীরা।
শনিবার (১৫ মে) সকাল থেকেই মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়ার প্রতিটি ঘাটেই যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। ঘাটের সামনে অপেক্ষামান রয়েছে ৩-৪ শতাধিক ছোট-বড় পরিবহন।
যাত্রী ও পরিবহন চালকদের অভিযোগ, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঈদের পরদিনও দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে। এছাড়া শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রীদের জন্য সর্বনিম্ন সুবিধাও নেই বলে দাবি করেন তারা।
সকালে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট ঘুরে দেখা গেছে ফেরি ঘাটে আসার কয়েক মিনিটের মধ্যেই সাধারণ যাত্রীদের দখলে চলে যায় পুরো ফেরি। কোথাও কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধির মানার বালাই নেই। তীব্র দাবদাহ ও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি উপেক্ষা করেই, চাপছে নারী, শিশু, বৃদ্ধ। অধিকাংশ যাত্রীর মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি।
জানা যায়, প্রতি ঈদেই শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ রুটে হাজার হাজার মানুষের উপচে ভিড় থাকে। কেননা বাংলাদেশের ২১ জেলার মানুষের যাতায়াত, তবে করোনাভাইরাসের এ মহামারিতে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এ নৌ রুটে যাতায়াতরত মানুষের সংখ্যা দাড়িয়েছে লাখে। গত দুই সপ্তাহে ঈদ উপলক্ষে লাখ লাখ মানুষ এ নৌ রুট দিয়ে যাতায়াত করেছে। কিন্তু সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ঘরে ফিরতি মানুষের ভিড় ও গরমে বাংলাবাজার ঘাটে নিহত হয় ৫ জন। এরপর থেকেই শিমুলিয়া ও বাংলাবাজার ঘাটে সকল ফেরি সচল করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ১৫-১৬ টি ফেরি শিমুলিয়া - বাংলাবাজার রুটে চলাচল করছে। ঈদের দ্বিতীয় দিনও সকাল থেকেই সকল ফেরি একাধিকবার আসা যাওয়া করছে। যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে পরিবহনগুলোর চেয়ে যাত্রীদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। সকাল থেকে ৫-৬টি ফেরি শুধুমাত্র যাত্রী পারাপার করেছে। এসময় কোনো প্রকার যানবাহন তোলা হয় নি।
ফেরিতে চলাচলরত কয়েকজন যাত্রীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ফেরি চলাচলে দুর্ভোগ কম থাকলেও গণপরিবহন বলেও থাকায় বাড়তি ভাড়া দিয়ে ঘাটে অাসতে হচ্ছে।
আসমা বেগম নামে এক নারী জানান, ভাড়া তিন থেকে চারগুণ করে বেশি রাখা হচ্ছে। মোহাম্মদপুর থেকে মাওয়া পর্যন্ত আসতে সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ হল। ভেবেছি ঈদের পর ভীড় কম থাকবে মোটামুটি স্বাভাবিক পরিস্থিতি পাবো। কিন্তু ঘাটে এসে দেখি এ অবস্থা। ভিড়ের জন্য সামনে এ গোনো যাচ্ছে না।
যাত্রী মোমেন মিয়া জানান, ফেরি তো যেমন তেমন কিন্তু ঘাটের অবস্থা খুবই করুণ। অথচ এ পথে লাখো মানুষের যাতায়াত। টয়লেট ব্যবহার, বিশুদ্ধ পানি পানের ব্যবস্থাটা পর্যন্ত নেই।
পণ্যবাহী এক ট্রাক চালক মহসিন জানান, গত ৪ ঘণ্টা যাবৎ ঘাটে অপেক্ষায়। যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে গাড়ি অল্প অল্প করে উঠতে দিচ্ছে। এই যে এতক্ষণ যাবৎ বসে আছি কিন্তু খাওয়ার পানির সুব্যবস্থা কোথাও পেলাম না। এমনি টয়লেট ব্যবহার করার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। এমন একটি জায়গায় এ ধরনের ব্যবস্থা কখনওই কাম্য না।
শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান জানান, এ নৌরুটে বর্তমানে ১৬টি ফেরি চালু রয়েছে। ঘাট এলাকায় প্রায় চার শতাধিক ছোট বড় যানবাহন পারের অপেক্ষায় রয়েছে। সকাল থেকেই যাত্রী ও পরিবহনের চাপ রয়েছে।