ভোলা সদর উপজেলায় একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে প্রতারণার অভিযোগে বেগম নূর নাহার নামের এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১১ জুন) রাত পৌনে ৯টার দিকে ভোলা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাগর বেকারি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. মিজানুর রহমান খান নূর নাহারের বিরুদ্ধে ভোলা সদর থানায় জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন-২০১০-এর দু'টি ধারায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ কাজল ইসলাম জানান, অভিযুক্ত নূর নাহার একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করায় তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচন অফিসার একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, নূর নাহার ২০১২ সালে প্রথম জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন করেন। সেখানে নিজের নাম নূর নাহার এবং বাবা ও মায়ের নাম যথাক্রমে রফিকুল ইসলাম ও হনুফা বিবি উল্লেখ করেন। ওই পরিচয়পত্রে তার জন্ম তারিখ ছিল ১৯৯১ সালের পয়লা জানুয়ারি এবং পেশা উল্লেখ করা হয়-গৃহিণী।
পরে ওই নারী ২০১৭ সালে একই ছবি ব্যবহার করে নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে আবারও জাতীয় পরিচয়পত্রের নিবন্ধন করেন। সেখানে নিজের নাম উল্লেখ করেন তামান্না আকতার এবং বাবা ও মায়ের নাম দেন-শামসুল হক দুলাল ও মনোয়ারা বেগম। নতুন এই পরিচয়পত্রে তার জন্ম তারিখ উল্লেখ করেন ১০ মে, ১৯৯৭। আর আগের পরিচয়পত্রের পেশা পরিবর্তন করে নতুনভাবে ছাত্রী হিসেবে নিবন্ধন করেন।
এর আগে, ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর নূর নাহারের বিরুদ্ধে তার প্রাক্তন স্বামী মো. মহিউদ্দিন প্রতারণার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিন জানান, ২০০৮ সালে নূর নাহারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর নূর নাহারের "অনৈতিক কর্মকাণ্ডের" কারণে ২০১১ সালে তার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিচ্ছেদের পর নূর নাহার তাকে ১০টি "মিথ্যা মামলা" দিয়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর তামান্না আকতার নামের নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে তিনি অন্য একটি বিয়ে করে।
মামলার বাদী উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. মিজানুর রহমান খান জানান, এই নারী তথ্য গোপন করে দু'টি জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন করেন, যা আইন পরিপন্থী। সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যম থেকে এই নারী সম্পর্কে জানার পর তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দু'টি জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণের দায়ে গ্রেফতার হওয়া নূর নাহারকে শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।