টিকটকের জনপ্রিয় মুখ নদী আক্তার ইতি। যদিও এটিই তার এক মাত্র নাম নয়। কখনও জয়া আক্তার জান্নাত কখনো বা নূর জাহান সহ আরও ১০টি নামে নিজের পরিচয় দেন তিনি। আর টিকটকের আড়ালে তিনি নারী পাচারকারী দলের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন।
ভারত, মালয়েশিয়া ও দুবাই এই তিন দেশে তিনি নারী পাচার করেন। পাচারের কৌশল হিসেবেই মূলত তিনি একেক সময় একেক নাম ব্যবহার করতেন।
মঙ্গলবার (২২ জুন) সকালে রাজধানীর তেজগাঁও ডিসি কার্যালয়ে এ তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ।
তিনি জানান, সোমবার (২১ জুন) নদী আক্তার ইতিসহ মানবপাচার চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে তেজগাঁও বিভাগের হাতিরঝিল থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আল আমিন হোসেন, সাইফুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, পলক মন্ডল, তরিকুল ইসলাম ও বিনাশ শিকদার।
মো. শহিদুল্লাহ বলেন, “ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নদীর দশটির মতো নাম পাওয়া যায়। নিজেকে নদী নামে পরিচয় দিলেও ভারতে সবাই তাকে ইতি নামে চেনেন। আবার ভারতীয় আধার কার্ডে তার নাম জয়া আক্তার জান্নাত। অন্যদিকে বাংলাদেশি পাসপোর্টে নুর জাহান আর সাতক্ষীরা সীমান্তে জলি এবং যশোর সীমান্তে তিনি প্রীতি নামে পরিচিত।”
নদীর বিয়ে হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী রাজীব হোসেনের সঙ্গে। ২০১৫ সালে রাজীব বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। এরপর থেকেই নদী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। মেয়েদের যশোর সীমান্তে বিভিন্ন বাড়িতে রেখে সুযোগমতো ভারতে পাচার করত চক্রটি। স্থানীয় এক ইউপি সদস্যকে প্রত্যেক মেয়ের জন্য এক হাজার টাকা করে দেওয়া হতো। পাচারকালে কোনো মেয়ে বিজিবির কাছে আটক হলে সেই ইউপি সদস্য আত্মীয় পরিচয় দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসতো বলে জানান পুলিশের এই কমর্কর্তা।
কতজনকে ভারতে পাচার করা হয়েছে এমন প্রশ্নের তিনি বলেন, “রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বিস্তারিত জানতে পারবো।”
সম্প্রতি ভারতে ভাইরাল হওয়া বাংলাদেশি তরুণীকে মারধরের সঙ্গে নদীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলেও তিনি জানান।