রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু কমছেই না।প্রতিদিনই ১০-১২ জন রোগী মারা যাচ্ছেন। বাড়ছে রোগী ভর্তির সংখ্যাও।
গত ১ জুন থেকে ২২ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ২২৯ জন।
লকডাউনের পরও রাজশাহীতে রোগী মৃত্যু কেন বাড়ছে? চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, করোনাভাইরাস ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বয়স্ক ব্যক্তিদের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসার কারণেই মূলত রোগীদের বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়ামদানী জানান, রাজশাহীতে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা যে বেশি এটা বলা যায় না। এখন যে সংখ্যাটা আছে এটা স্বাভাবিক। কেননা যারা মারা যাচ্ছে তাদের অধিকাংশই বয়স্ক। বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। আবার অনেকেই বেশি দেরি করে হাসপাতালে আসছেন।
লকডাউনের সাথে মৃত্যুর সর্ম্পক নেই বলেও জানান তিনি। লকডাউন সংক্রমণ কমাতে ভূমিকা রাখে। রাজশাহীতে আরও আগেই লকডাউন দেওয়া উচিত ছিলো বলে মনে করেন এই বিশেষজ্ঞ।
রামেক হাসপাতালে ১০২ জন চিকিৎসক করোনা রোগীদের চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন। নতুন করে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য ১২ জনের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। ১৩ টা ওয়ার্ডে প্রতিমাসে ২২ জন করে নার্স ডিউটি করছে। ২০টা আইসিইউ রয়েছে। আইসিইউতেই ৯০ জন নার্স আছেন বলে জানান শামীম ইয়ামদানী।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. নওশাদ আলী বলেন, ”এখন হাসপাতালে হয়তো ৪০০ রোগী আছে। এদের মধ্যে মারা যাচ্ছে ১০-১২ জন। যারা দেরিতে আসছেন তারাই মারা যাচ্ছেন। অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শের মধ্যে থাকছেন না। বাসায় হয়তো কবিরাজি বা অন্য চিকিৎসা নিচ্ছেন। বেশি খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে তখন রোগীকে আর বাঁচানো যায় না।”
শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। সুতরাং সকলেই সচেতন থাকতে হবে। অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে বলে জানান এই শিশু বিশেষজ্ঞ।
রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদার জানান, শহরে আক্রান্ত ও পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। উপজেলাগুলোতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকলেও গ্রামের মানুষ পরীক্ষা কম করাচ্ছে। এক্ষেত্রে গ্রামের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়মিত যোগাযোগের জন্য একটি টিম গঠন করা হচ্ছে। যারা রোগীদের পরামর্শ দিবে।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক জানান, রাজশাহীতে সংক্রমণ ঠেকাতে জেলায় নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হচ্ছে । প্রয়োজনে জেল জরিমানাও করা হচ্ছে। উপজেলাতে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।