খুলনা বিভাগে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় খুলনা বিভাগে শনাক্ত ১ হাজার ২০১ জন। মারা গেছেন ২৭ জন। যার মথ্যে খুলনা জেলায় মারা গেছে ৯ জন এবং শনাক্ত হয়েছেন ২২৩ জন। নমুনা পরীক্ষায় খুলনা জেলায় শনাক্তের হার ৪৫ শতাংশ।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুয়ায়ী শনাক্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষে অবস্থান করছে খুলনা। প্রতিদিনই রেকর্ড হচ্ছে খুলনায়। কিন্তু সচেতনতা বাড়ছে না মানুষের মাঝে। কাঁচা বাজারে এ অসচেতনতার চিত্র মারাত্মক।
শুক্রবার (২ জুলাই) সকালে খুলনার ময়লাপোতা মোড়ের কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা সালাম শেখ দোকানে বসা অবস্থায় মাস্ক রেখেছেন থুতনিতে। সামনে থাকা ক্রেতারাও মাস্ক ছাড়া কেনাকাটা করছেন। তিনি জানান, মাস্ক মুখে রেখে ক্রেতাদের সাথে কথা বলতে সমস্যা হয়। তাই ক্রেতারা আসলে মাস্ক নামিয়ে কথা বলি।
গরুর মাংসের বিক্রেতা রাজু’র দোকানে দেখা যায় জটলা। সেখানে নেই সামাজিক দূরত্ব মানার কোন ধরনের চেষ্টা। রাজু বলেন, “মাংস নিয়ে ক্রেতারা চলে গেলেই জায়গা ফাঁকা হয়ে যাবে। তাই ক্রেতা আসলে জটলা কমাতে মাংস দ্রুত দিয়ে ছাড়িয়ে দেই।”
খুলনার ট্রাক টার্মিনাল ও দৌলতপুর মুহসীন মোড় পাইকারী কাঁচাবাজার সংলগ্ন এলাকায় ব্যবসায়ী, পাইকার, আড়ৎদার, ক্রেতা-বিক্রেতার অবাধ বিচরণ চলছে। খুলনার পাইকারী ও খুচরা কাঁচা বাজারগুলো এখন করোনা হটস্পটে পরিণত।
দৌলতপুর পাইকারী বাজার সবজি ব্যবসায়ী মো জালাল বলেন, “বাজারে সবজি না আনতে পারলে সংসার চলে না। এ বাজারে প্রচুর লোকের সমাগম ঘটে। করোনাকে ভয় করে জীবন চলছে না। জীবন আল্লাহর দান, তাই বাঁচা মরাও তার ওপর ভরসা।”
তরুন ব্যবসায়ী রাকিবুল হাসান আয়রণ বলেন, “স্বাস্থ্যবিধির না মানার কারণে দূর্ভোগ আমরা নিজেরাই ডেকে আনছি। আমরা সচেতন হলে বার বার সরকারকে লকডাউন বা কঠোর বিধি নিষেধ দিতে হতো না।”
কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মাদ আলী বলেন, “খুলনার করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ানক অবস্থায় চলছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে চলেছে। বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের না হওয়া উচিত।”
দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নজরুল ইসলাম জানান, মানুষের জীবনের নিরাপত্তার জন্য এই লকডাউন যে কোন মূল্যেই বাস্তবায়ন করা হবে। লকাডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে।
খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেড রাকিবুল হাসান জানান, লকডাউনের বিধি নিষেধ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।