অবশেষে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ঠাঁই হচ্ছে শেকলবন্দি রবিউল ইসলামের।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঝোটন চন্দ তাকে হাসপাতালটিতে ভর্তি করার বিষয়টি জানান।
এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকারের নজরে আসে। তার নির্দেশে রবিউলকে একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন ইউএনও।
এরপরই পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলীমুজ্জামানের নির্দেশে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল আলম তার সচিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন।
সোমবার অসুস্থ রবিউল ইসলামের বাবা নুরুল ইসলামের হাতে চিকিৎসা বাবদ পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন ইউএনও ঝোটন চন্দ। এসময় উপজেলা সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা প্রকাশ কুমার বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন - বাবার পরিত্যক্ত দোকান ঘরে ১৮ বছর ধরে শিকলবন্দী ছেলে!
এ বিষয়ে ইউএনও ঝোটন চন্দ বলেন, “রবিউলের সুচিকিৎসার জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তির যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। মঙ্গলবার পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হবে।”
এদিকে, রবিউলের সংবাদটি ছড়িয়ে পড়ার পর তার বাবা নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “রবিউল আমার বড় ছেলে। ওর বয়স যখন ১০ বছর তখন হঠাৎ করে একদিন অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারপর থেকে আস্তে আস্তে শরীর শুকিয়ে যায়। স্থানীয় চিকিৎসক ছাড়াও জেলা সদর থেকে শুরু করে বড় বড় ডাক্তার, কবিরাজ, ফকির, হুজুরের সবধরনের চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। দিনদিন মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে সে। একপর্যায়ে ভাঙচুর-অস্বাভাবিক আচরণ করার কারণে কোমর ও পায়ে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি।”
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “একদিন আমার সব ছিল। কৃষিজমি, দুইটা মুদি দোকান, এখন আর নেই, সব শেষ। ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমি এখন পথের ফকির। রবিউলসহ আমার তিনটি ছেলে। মেজ ছেলে ইমরান কৃষিকাজ করে, ছোট ছেলে কোরআনের হাফেজ। আমি এখন ভ্যান চালিয়ে কোনোমতে সংসার চালাই।”