খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় বাবা-মাকে ভরণপোষণ না দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় ৩ ছেলেকে আটকের পর পুলিশের সোপর্দ করার ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী ওই বাবা-মায়ের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) এ ঘটনায় ‘বাবা-মায়ের ভরণ-পোষণে অবহেলা করবে না’-এ মুচলেকা দিয়ে আদালত থেকে জামিন পেয়েছে আটক ৩ ছেলে। এর আগে ২ আগস্ট পাইকগাছা উপজেলার গোপালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গদাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জুনায়েদুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, “বর্তমানে সার্বক্ষণিক খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বৃদ্ধ ওই দম্পতির। বর্তমানে ভালো আছেন তারা। কোনও অসুবিধা হচ্ছে না।”
এদিকে, বৃদ্ধ ওই বাবা-মায়ের খাদ্য, চিকিৎসা, পোশাকসহ যাবতীয় ব্যয়ভার এখন থেকে স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন বহন করবে বলে জানিয়েছেন পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এজাজ শফি।
তিনি জানান, গোপালপুর গ্রামের বৃদ্ধ মেছের আলী গাজী (৯৮) এবং মাতা সোনাভান বিবি (৮৬)। তাদের ৪ ছেলে ও ৫ মেয়ে রয়েছে। জমি বৃদ্ধ ওই দম্পতির জমিজমা কয়েক বছর আগেই ৪ ছেলে লিখে নেয়। এরপর থেকে বড় ছেলে রওশন আলী গাজী মায়ের এবং বাকি তিন ছেলে পালাক্রমে বাবার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেন। ২ আগস্ট নিয়ম অনুযায়ী ছোটছেলের খাবার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে তার বাবাকে খেতে না দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীও বাড়ি থেকে বের হন এবং পার্শ্ববর্তী মানিকতলা বাজারের একটি দোকানে আশ্রয় নেন।
খবর পেয়ে ওই রাত ১০টার দিকে মানিকতলা বাজারে যান ইউএনও এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। ৪ ছেলেকে খুঁজে বের করে গদাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী জুনায়েদুর রহমান ও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে শুনানি করেন। এরপর বৃদ্ধ ওই বাবা ও মাকে বড় ছেলের জিম্মায় দেন। একইসঙ্গে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের একটি সেট এবং একমাসের খাবার দেন তিনি। বাকি ৩ ছেলে মতলেব গাজী, মশিয়ার গাজী ও মোশাররফ গাজীকে আটক করা হয় বলেও জানান তিনি।