মধুমতী নদীর তীব্র ভাঙনে দিশেহারা ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষ। এরই মধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি, বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ অসংখ্য স্থাপনা। এবার ভাঙন হুমকিতে রয়েছে রউফনগরে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর।
জানা যায়, মধুমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের দয়ারামপুর, রউফনগর, চরগয়াসপুর, জারজাননগর, বকশিপুর, গন্ধশালী ও ফুলবাড়িয়া গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ওই সব এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে নদীতীরের বাসিন্দাদের। প্লাবিত হয়েছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সুপেয় পানি ও গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
রউফনগর গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক মো. জাকির হোসেন জানান, ১০ বছর ধরে মধুমতীর ভাঙন চলছে। এতে নদীতে বিলীন হয়েছে ফসলি জমি, বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ অসংখ্য স্থাপনা। বর্তমানে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে রউফনগরে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। নদী থেকে মাত্র ২০০ গজ দূরে রয়েছে জাদুঘরটি। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে বাঁধ না দিলে জাদুঘরটি রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
গন্ধশালী গ্রামের বাসিন্দা আসলাম শেখ জানান, নদীভাঙনে এ পর্যন্ত গন্ধশালী গ্রামের শতাধিক পরিবার একবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছে। এলাকা ছেড়ে অনেকেই ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে।
কামারখালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান বিশ্বাস বাবু বলেন, “মধুমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার ইউনিয়নের ৬-৭ গ্রামের প্রায় ৫০০ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। সুপেয় পানি ও গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি এসব গ্রামে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “যেখানে জাদুঘরটি অবস্থিত তার অপরপ্রান্তে বাঁধ দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। বাঁধ না দিলে জাদুঘরটি রক্ষা করা কঠিন হবে।”
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরে যাওয়ার সড়কের কয়েকটি স্থান বিলীন হয়ে যায়। সেখানে জিওব্যাগ ফেলে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। সড়কটি দিয়ে এখন মানুষ চলাচল করতে পারছে। তিনি আরও জানান, যেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে, ওই এলাকাগুলো ইতোমধ্যেই পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।