ভারতের কারাগারে বিদেশি বন্দির মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় রয়েছে বাংলাদেশের নাগরিক।
রবিবার (২৯ আগস্ট) সাউথ এশিয়া পিস অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (এসএপিএএন) আয়োজিত “দক্ষিণ এশিয়ায় বন্দিদের অধিকার” শীর্ষক একটি ওয়েবিনারে বক্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কমপক্ষে ২,৫১৩ জন বাংলাদেশি এখন প্রতিবেশী দেশ ভারতে বন্দি রয়েছেন। এদের মধ্যে ১, ৪৭০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং বাকি ১,০৪৩ জনের বিচার কার্যক্রম চলছে। ভারতের জেলে ও বিচারের আওতায় থাকা সকল বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে যা যথাক্রমে ৬৪% ও ৩৫%।
এদিকে, বাংলাদেশে জনসংখ্যার প্রতি ১০ হাজার জনের মধ্যে ৩৫ জন বন্দি। দাপ্তরিক তথ্যমতে, দেশটিতে কারাগারে অবস্থানের মাত্রা দাঁড়িয়েছে ১৯৫.৮%।
জনসংখ্যা ও বন্দির অনুপাতে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ তিন দেশের মধ্যে অন্যতম। ওয়ার্ল্ড প্রিজন ব্রিফ (ডব্লিউপিবি) অনুসারে, বাংলাদেশের আগে বিশ্বে এরকম মাত্র দুটি দেশ আছে যেখানে বিচারের আগে রিমান্ড কিংবা কারাদণ্ড দেওয়া মানুষের সংখ্যার অনুপাত বেশি। সেগুলো হলো- লিবিয়া (৯০%) এবং সান মেরিনো (৮৩%)।
ওয়ার্ল্ড প্রিজন ব্রিফের (ডব্লিউপিবি) সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে ৭১ হাজারেরও বেশি মানুষ বিচারের আগেই রিমান্ড কিংবা কারাগারে রয়েছেন। যা মোট বন্দিদের ৭১.৩%। দুই দশক আগে, প্রাক-বিচার এবং রিমান্ডে নেওয়া বন্দিদের সংখ্যা ছিল ৪৪,৩৬৮ যা জেলের মোট বন্দির প্রায় ৭৪.৬%।
বিশিষ্ট ফটোগ্রাফার শহিদুল আলম ১০৭ দিন কারাগারে থাকার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।
তিনি বলেন, “আমার কারাগারে থাকাকালীন জেল সংস্কারের সাথে খুব বেশি জড়িত ছিলাম। আমি অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে কারাগারের ভেতরে শিল্পকর্ম চর্চা শুরু করি। আমরা ম্যুরাল এবং পেইন্টিং তৈরি করেছি। আমরা একটি লাইব্রেরি স্থাপন করেছি এবং একটি জিম তৈরি করেছি। বন্দিরা আমার বন্ধুদের দেওয়া কিছু বাদ্যযন্ত্রের সাহায্যে ৪০টি গান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল। অবশ্যই আমি মানুষকে কারাগারে যাওয়ার সুপারিশ করবো না, কিন্তু আমার ভিতরের সময় খুব ফলপ্রসূ ছিল।”
এ সময় বিশিষ্ট ভারতীয় সাংবাদিক ভারত ভূষণ অধিবেশনটি উপস্থাপনা করেন। ভারতে বৃন্দা গ্রোভার, পাকিস্তানের হিনা জিলানি, বাংলাদেশ থেকে সুলতানা কামাল, শ্রীলঙ্কার অম্বিকা সাতকুনাথন এবং নেপালের মন্দিরা শর্মাসহ প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।