Tuesday, May 13, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

বগুড়ায় ‘বউমেলা’, নারীদের ভিড়

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজাকে ঘিরে সরকারপাড়া গ্রাম উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। মেলায় হিন্দু ধর্মালম্বীরা আসেন ভক্তি আর মানত নিয়ে। অন্য ধর্মের লোকজন আসেন আনন্দ উৎসব ভাগাভাগি করতে।

আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:০৫ পিএম

বগুড়ার ধুনটের ইছামতি নদীর তীরে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ‘বউমেলা’ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি বছরের মত এবারও ছিল নারী ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। 

আজ শুক্রবার ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনায় দেবী দুর্গার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এক দিনের এই বউমেলার অনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধুনট পৌরসভার ছোট একটি গ্রাম সরকারপাড়া। ওই গ্রামের অধিকাংশ পরিবার হিন্দু সম্প্রদায়ের। গ্রামের পূর্ব পাশে ইছামতি নদী। নদীতে ধুনট সদর, সরকারপাড়া ও দাসপাড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। প্রতিমা বির্সজন উপলক্ষে লোকজনের সমাগম বেশি হওয়ায় যুগ যুগ ধরে ওই গ্রামে মেলা বসে। ‘বউ মেলায়’ শুধু নারীরাই কেনাকাটা করতে পারেন। বিক্রেতাদের অধিকাংশই নারী। এ কারণে শতাব্দী প্রাচীন ওই মেলাটির নামকরন হয়েছে ‘বউমেলা’।

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজাকে ঘিরে সরকারপাড়া গ্রাম উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। মেলায় হিন্দু ধর্মালম্বীরা আসেন ভক্তি আর মানত নিয়ে। অন্য ধর্মের লোকজন আসেন আনন্দ উৎসব ভাগাভাগি করতে।

বিজয়া দশমীতে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মেলার সমাপ্তি হয়। যুগ যুগ ধরে এই মেলা হয়ে আসছে। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে মেলার প্রসার ঘটছে। মেলায় বেচাকেনা হয়েছে খই, মুড়ি, মুড়কি, বাতাসা, জিলাপিসহ নানা রকনের খাবার। ছিলো বাঁশি, বেলুন, ঝুনঝুনিসহ হরেক রকম খেলনা, চুড়ি, দুল, ফিতা, টিপসহ রকমারি প্রসাধনী।

মেলায় আগত ফৌজিয়া বীথি নামের এক সহকারী শিক্ষিকা জানান, ‘বড় বড় শপিং মলের চোখ ধাঁধানো বাহারী পণ্য আমাকে টানতে না পারলেও সরকারপাড়ার বউমেলা টেনে নিয়ে যায় বারে বারে।’ বিথী তার নিজের ও মেয়েদের জন্য প্রশাসন সামগ্রী কিনেছেন। 

আশপাশের গ্রামের পপি রানী রানি সাহা, বন্ধনা রানি, স্বরস্বতি রানি ও শিউলী রানি প্রমুখ জানান, মেলার ভিতরে পুরুষ না থাকায় অনেক স্বাচ্ছন্দে কেনাকাটা করেছেন।

মেলা কমিটির সভাপতি নিতাই চন্দ্র জানান, প্রতিবছরই মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। এবারও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মেলা শেষ হয়েছে। মেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ মোতায়েন ছিল এবং এলাকাবাসীরাও সহযোগিতা করেছেন। 

নিতাই আরও জানান, মেলায় সব ধর্মের মানুষের সমাগম ঘটে। ঐতিহ্য বজায় রেখে এবারও বউ মেলা অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।


   

About

Popular Links

x