পূর্ব আফ্রিকার দেশ মরিশাসে একই কোম্পানিতে কর্মরত মেয়েকে ধর্ষণ ও বাবাকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন এক বাংলাদেশি বাবা-মেয়ে।
বাংলাদেশে ফিরে এসে তারা অভিযুক্ত কোম্পানির বিদেশি মালিক এবং এ ঘটনায় জড়িত তার সহযোগী বাংলাদেশিদের বিচার চেয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আর্থিক অবস্থা উন্নয়নের আশায় রিক্রুটিং এজেন্সি “গোলাম রাব্বি ইন্টারন্যাশনাল” এর মাধ্যমে ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে মরিশাস গিয়ে “ফায়ার মাউন্ট টেক্সটাইল কোম্পানি” নামে একটি প্রতিষ্ঠানে হেলপার হিসেবে কাজ শুরু করেন ভুক্তভোগী নারী। পরবর্তীতে তারা বাবাও ওই কোম্পানিতে বাবুর্চির কাজ নিয়ে একই বছরের নভেম্বর মাসে সেখানে যান।
তিনি জানান, প্রথম সপ্তাহ কোনো অসুবিধা না হলেও পরের সপ্তাহেই কোম্পানির মালিক অনিল কলি’র নজরে পড়ে যান তিনি। পরবর্তীতে ওই কোম্পানিতে কর্মরত অন্য বাংলাদেশিদের সহায়তায় তাকে ধর্ষণ করেন অনিল। এছাড়া, ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কোম্পানির বাংলাদেশি ক্যান্টিন ইনচার্জ মো. শাহ আলমও তাকে ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তাকে মরিশাসের একটি ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো হয়। পরে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী মেয়েটি দেশে ফিরে আসলেও জিম্মি করে মাসসিক নির্যাতন করা হয় তার বাবাকে।
ভুক্তভোগী জানান, চলতি বছরের ১০ জুলাই ঢাকার রামপুরা থানায় পেনাল কোড, ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এবং ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের পৃথক ধারায় জোরপূর্বক শ্রম শোষণ, ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহায়তা এবং গর্ভপাত ঘটানোর অপরাধে কোম্পানির মালিক অনিল ও ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে কোম্পানিতে কর্মরত শাহ আলম, ফুরকান, সিদ্দিক, আসলামসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।
এ বিষয়ে প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেছেন, “মরিশাসে নির্যাতনের শিকার মেয়ের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তার বাবাকে চলতি বছরের ৩০ আগস্ট দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বিদেশে এ ধরনের নির্যাতনের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর।”
এদিকে, বাংলাদেশের মতোই মরিশাসের গণমাধ্যমেও বিষয়টি উঠে আসলে এবং মরিশাসে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে অভিযোগ পেয়ে মরিশাসের পররাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয় ঘটনাটি তদন্তের জন্য মামলা করেছে।
অন্যদিকে, ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, এ বিষয়ে সমঝোতা না করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।