সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম পানথুমাই গ্রামে দুই চাচাত ভাইয়ের স্ত্রী হাসিনা বেগম ও মালেকা বেগমকে হত্যার দায়ে মুখলিছ মিয়া ওরফে মখনকে (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) এ রায় দেন। একই সঙ্গে আদালত মখনের স্ত্রী রাহেলা বেগমকে (৪৮) ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত এ দম্পতি বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মুখলিছ মিয়া ওরফে মখন গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম পানথুমাই গ্রামের বাসিন্দা।
সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি নিজাম উদ্দিন জানান, এটি একটি আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। নদীর তীরে মুর্তার চারা লাগানোকে কেন্দ্র করে মখন তার আপন চাচাতো দুই ভাইয়ের স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে।
আদালতের নথিপত্র ও বাদীপক্ষ সূত্রে জানা গেছে , ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল শুক্রবার দুপুর পৌনে ১টায় গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম পানথুমাই গ্রামের আজির উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা বেগম (৪০) ও একই বাড়ির জমসু মিয়ার স্ত্রী মালেকা বেগম (৩৮) তাদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী পিয়াইন নদীর ভরাট হওয়া তীরে মুর্তার বাগানে চারা রোপন করতে যান। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মখন হাতে থাকা দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাদেরকে ঘটনাস্থলেই হত্যা করেন। এ ঘটনায় নিহত হাসিনা বেগমের ছেলে আব্দুর ছবুর বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
২০১৭ সালের ২০ জুলাই দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় আসামি মখলিছ মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর আদালত অভিযোগের সংশোধন করেন। এরপর মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ১৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণশেষে আদালত এ রায় দেন।
রায়ে মখনকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়। মামলার আলামত নষ্ট করায় ঘাতকের স্ত্রী রাহেলা বেগমকে নারী ও সন্তানদের বিষয়টি ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের দণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন ও অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট শামসুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ।