গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারী নারী ড. শাহজাহানের বাসায় কাজ করতেন। এ বিষয়ে অভিযোগ করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেনি।
ওই নারী বলেন, “আমি শাহজাহান স্যারের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতাম। স্যারের স্ত্রী বাসায় না থাকলে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে আমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করতেন। খারাপ উদ্দেশ্য প্রকাশ করতেন। এমনকি আর্থিক প্রলোভন দেখাতেন। আমি নানা কৌশলে তার খারাপ উদ্দেশ্য থেকে বাঁচার চেষ্টা করেছি। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এ রকম শ্লীলতাহানীর শিকার হয়ে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। একই সঙ্গে ভয়-ভীতি প্রদর্শনের ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকি।”
তিনি আরও বলেন, “পরবর্তীতে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকের কাছে ঘটনা খুলে বলি। এ ঘটনার বিচার চাই। কিন্তু তখন প্রত্যেক শিক্ষক আমাকে জানান আপনি যার কাছে বিচার চাইবেন তিনিই তো অপরাধী। পরবর্তীতে স্থায়ী ভিসি স্যার আসলে করোনাভাইরাসকালীন বন্ধে আমি তার সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। আমি আশাবাদী আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানীর সুষ্ঠু বিচার তার কাছে পাব।”
থানায় বা আদালতে অভিযোগ না করে কিংবা মামলা না করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “আমরা গরীব মানুষ। আদালতে গেলে অনেক টাকা লাগতে পারে। তাই আমি উপাচার্য স্যারের কাছে বিচার চেয়েছি।”
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক প্রফেসর ডা. শাহজাহান তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ভিসি খন্দকার নাসির উদ্দিন পদত্যাগ করেন। পরে আমি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করি। নাসিরউদ্দিনপন্থীরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। আমাকে হেয় করার জন্যই এটি করা হচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বের হয়ে আসবে।”
এদিকে, ওই নারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের কাছে যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করলেও অভিযোগপত্র গ্রহণ করেননি উপাচার্য প্রফেসর ড. একিউএম মাহবুব।
অভিযোগকারী পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে বিষয়টি জানালে তারাও অভিযোগ নেয়নি।
এ বিষয়ে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের প্রধান মানসুরা খানম বলেন, “অভিযোগকারীর অভিযোগটি বিধিসম্মত না হওয়ায় সেটি গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।”
অভিযোগ গ্রহণ না করার বিষয়ে উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন, “ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ঘটেনি। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ নয়। তাই তার অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়নি। কারণ এ ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার আমার নেই। এই ঘটনায় বিচার প্রাপ্তির জন্য ভুক্তভোগীকে প্রচলিত আইনের আশ্রয় নিতে হবে।”