প্যারিস চুক্তি কঠোরভাবে বাস্তবায়নে পুনরায় আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের গ্রহজনিত জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য বিশ্ব নেতাদের দ্রুত জোরালো পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।
কপ -২৬ এর কয়েক মাস বাকি থাকতেই শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতাদের সামনে ছয় দফা প্রস্তাব রেখেছেন।
সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরের ট্রাস্টিশীপ কাউন্সিল-এ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের আয়োজিত এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এই ছয় দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন।
ছয়টি প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার জন্য প্যারিস চুক্তির কঠোর বাস্তবায়ন, উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিল আদায়,এই তহবিলের ৫০ শতাংশ অভিযোজন এবং স্থিতিস্থাপকতার জন্য, বিশেষ করে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে বরাদ্দ দেয়া।
অন্য প্রস্তাবগুলো হলো- উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নতুন অর্থনৈতিক কৌশল তৈরি করা এবং সবুজ প্রযুক্তি স্থানান্তর করা, ক্ষয়ক্ষতি চিহ্নিত করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৃহৎ আকারের জনসংখ্যার স্থানচ্যুতি এবং মহামারি ও জলবায়ু সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় সিভিএফ দেশগুলোর ক্ষমতা বৃদ্ধি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আহ্বানে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যৎ রেখে যাওয়ার জন্য আমাদের একটি 'পুরো বিশ্ব' পদ্ধতির প্রয়োজন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বৈশ্বিক গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনে সবচেয়ে কম অবদান রাখে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো। তবুও, তারা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সবচেয়ে বড় শিকার।”
তিনি উল্লেখ করেন যে সাম্প্রতিক আইপিসিসি রিপোর্ট তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একটি ভয়াবহ চিত্র সরবরাহ করেছে। যদি বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে যায়, তারা স্থায়ী ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, “এই দেশগুলোকে তাদের অভিযোজন এবং প্রশমন প্রচেষ্টায় সমর্থন করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতার সঙ্গে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক পথিকৃৎ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।”
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, “বাংলাদেশ সবুজায়ন বৃদ্ধি, স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে কেন্দ্র করে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে।’ তিনি ঘোষণা করে বলেন, ‘আমরা জলবায়ু দুর্বলতা থেকে জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতায় যেতে জলবায়ু সমৃদ্ধি (ভিআরপি) যাত্রায় আছি।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভি ২০ -এর প্রধান হিসেবে, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থ উন্নয়নই মূল লক্ষ্য।”