Wednesday, March 26, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

ডা. জাহিদ ছিলেন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক

আপডেট : ১০ জুন ২০১৮, ০৮:৫৮ পিএম

অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেফতার ডা. জাহিদুল আলম কাদির ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ২০০০-২০০১ মেয়াদে মুরাদ-সাদী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। পরে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। ডা. জাহিদের অস্ত্রসহ গ্রেফতার ও নানা কাহিনী বের হয়ে আসায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তার সহপাঠীসহ চিকিৎসকরা। তার বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে কোনও থানায় মামলা নেই বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের তথ্য মতে, জাহিদুল আলম কাদিরের বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ গ্রামে। তার বাবার নাম হাবিবুর রহমান। জাহিদুল ১৯৯৪-৯৫ সেশনে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে ৩২ ব্যাচের এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। ভর্তি রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৭৯৮, ক্লাস রোল ছিল ৯৮। জাহিদ ২০০২ সালের মে মাসে এমবিবিএস পাশ করে বের হন।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আনোয়ার হোসেন। তিনি জানান, ১৯৯৪-৯৫ সেশনের শিক্ষার্থীরা ২০০১ সালে পাস করে বের হলেও ডা. জাহিদ এমবিবিএস পাস করেছেন ২০০২ সালের মে মাসে। জাহিদ অ্যানেসথেসিয়ার ওপর ডিগ্রি এবং আল্টাসাউন্ডের ওপর কোর্স শেষ করে শহরের বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ করতেন। অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেফতারের বিষয়টি জাহিদুলের পেশার সঙ্গে মিলছে না দাবি করেছেন তিনি।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মতিউর রহমান ভূইয়া জানান, জাহিদ এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তির পর ছাত্রলীগে যোগদান করেন। জাহিদ সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামে জাহিদ সব সময় সামনের কাতারে থাকতো এবং নেতৃত্ব দিতো। মেডিক্যাল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ২০০০-২০০১ মেয়াদে মুরাদ-সাদী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করে সে। পরে ডা. সাদী লেখাপড়া শেষ করে কলেজ থেকে বের হয়ে গেলে  ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছে সে।

গ্রেফতার ডা. জাহিদুলের একাধিক সহপাঠী চিকিৎসক বন্ধু নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জাহিদ ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী এবং নেতা ছিলেন। ২০০২ সালে এমবিবিএস পাশ করে কলেজ থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর তিনি রাজনীতি থেকে সরে যান এবং কারও সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখেননি। কলেজে ভর্তির পর থেকেই অস্ত্রের প্রতি জাহিদের ঝোঁক ছিল দাবি করে সতীর্থ চিকিৎসকরা জানান, জাহিদের সঙ্গে সব সময় আত্মরক্ষার জন্য চাকু কিংবা ছুরির মতো একটা কিছু থাকতো। তবে সে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী  এবং পেশাদার কিলার এই বিষয়টি তারা মানতে পারছেন না।

একই কলেজের এম-৩১ ব্যাচের চিকিৎসক বিপ্লব জানান,আড়াই মাস আগে সিলেটের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে বাসে ময়মনসিংহে আসার পথে ডা. জাহিদের সঙ্গে তার দেখা হয়। ওই বাসের পাশাপাশি সিটে আসছিলেন তারা। এসময় দুজনের মধ্যে অনেক কথা হয়।

ডা. জাহিদ গত দুই বছর ধরে বর্তমান স্ত্রী মাসুমা আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে ময়মনসিংহ মহানগরীর বাঘামারা এলাকার ২০/এ মরহুম আব্দুস সালামের বহুতল ভবনের ৪ তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। বাসার মালিক মরিয়ম আক্তার চায়না জানান, গত দুবছর ধরে স্বামী-স্ত্রী ভাড়া নিয়ে বাসায় থাকেন। তাদের একটি পুত্র সন্তান আছে।সে হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করে।

একই বাসার আরেক ভাড়াটিয়া  জানান, তারা ডা. জাহিদের পাশের ফ্ল্যাটে প্রায় দেড় বছর ধরে আছেন। এই দেড় বছরে ওই পরিবারের সঙ্গে তাদের ৫/৬ বার দেখা হয়েছে। ডা. জাহিদ ও তার স্ত্রী মাসুমা বেশিরভাগ সময় বাইরেই বেশি থাকতেন। আশপাশের ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে তাদের তেমন একটা সম্পর্ক ছিল না জানান ওই প্রতিবেশী নারী।

বাঘমারা এলাকার মুদি দোকানী আমেনা খাতুন  জানান, ডা. জাহিদের স্ত্রী মাঝে-মধ্যেই তার দোকান থেকে বাকি কিংবা নগদে সদাই নিতেন। ডা. দম্পতি বেশ হাসিখুশি ছিলেন দাবি করে আমেনা আরও জানান, শিক্ষিত ডাক্তার পরিবার অস্ত্রের ব্যবসা করবে এটা এলাকার কেউ বিশ্বাস করতে পারছে না।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান, ডা. জাহিদুল আলম কাদিরের বিরুদ্ধে থানায় কোনও মামলা নেই।

   

About

Popular Links

x