কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় যুক্ত হতে যাচ্ছে জাতিসংঘ। গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহসীন।
শনিবার (৯ অক্টোবর) এ লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হবে।
মো. মহসীন বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে শনিবার এ চুক্তি করা হবে। এমওইউতে বাংলাদেশের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে আমি এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার হেড স্বাক্ষর করবেন।
এর আগে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় জাতিসংঘের সংযুক্তি নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া নিয়ে ২৮ জুলাই জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তৃতীয় দফা আলোচনার পর ওই সমঝোতা স্মারকের খসড়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ সম্মত হয়।
সরকার এখন পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়ন এবং দেশী–বিদেশি সাহায্য সংস্থাকে যুক্ত করে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে শুরু থেকেই জাতিসংঘ বিরোধিতা করে এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ভাসানচর কতটা ঝুঁকিমুক্ত, রোহিঙ্গাদের অবাধে ভাসানচর থেকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডে চলাচলের সুযোগ নিশ্চিত, তাদের স্বেচ্ছায় ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে কি না- এ বিষয়গুলো নিয়ে জাতিসংঘের প্রশ্ন ছিল। পাশাপাশি আপত্তি ছিলো মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অবাধ চলাচলে বিধিনিষেধ নিয়েও।
পরবর্তীতে সেখানে একটি কারিগরি দল পাঠায় জাতিসংঘ। কাছাকাছি সময়ে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি), ঢাকায় পশ্চিমাসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের পর জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) দুই সহকারী হাইকমিশনারের ভাসানচর সফরের পর জাতিসংঘের কারিগরিদলসহ প্রতিনিধিদল ভাসানচর নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের চাপ কমাতে সরকারের ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ছয় দফায় মিয়ানমারের ১৮,৫২১ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে শিশু ৮,৭৯০ জন, নারী ৫,৩১৯ জন ও পুরুষ ৪,৪০৯ জন।