কুমিল্লার বুড়িচংয় উপজেলায় মাটিবাহী একটি ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে অটোরিকশার পাঁচ আরোহী নিহতের ঘটনায় ট্রাক চালক রাকিবুল হাসান রবিনকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমিল্লার র্যাব ১১-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
এর আগে শনিবার কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা দক্ষিণ ইউনিয়নের মুরাপাড়া গ্রাম থেকে পালানোর সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুর্ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন রবিন।
র্যাব জানিয়েছে, রবিনের বাবা পেশায় একজন সিএনজি চালক এবং তার চাচা ট্রাক চালক। ছোটবেলা থেকেই তাদের সঙ্গে থেকে ট্রাক চালানো শিখেছে সে। এরপর, ২-৩ বছর আগে কোনো বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স বা কোনো ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ ছাড়াই মো. আলেক (৫৫) নামে এক চালকের ট্রাক চালাতে শুরু করে সে।
গ্রেপ্তার রবিনের বরাত দিয়ে র্যাব জানিয়েছে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা থেকে সারারাত মাটিভর্তি ট্রাক নিয়ে কুমিল্লার দেবপুর থেকে ঘোষনগরে একাধিক (ট্রিপ) যাতায়াত দেয় রবিন। বেশি ট্রিপে টাকাও বেশি বলে অন্য ট্রাক চালকের আগে পৌঁছানোর জন্য বেপরোয়া গতিতে ট্রাক চালাচ্ছিল সে।
রবিন জানায়, আনুমানিক ভোর ৫টার দিকে মাটি বোঝাই ট্রাক নিয়ে রওনা দেয় সে। এ সময় ঘন কুয়াশা, বেপরোয়া গতি ও সারারাত ট্রাক চালানোয় ক্লান্ত থাকায় যাত্রীবাহী অটোরিকশাটি লক্ষ্য করতে পারেননি তিনি। ট্রাক থামানোর জন্য ব্রেক করলেও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অটোরিকশাটিকে চাপা দিয়ে প্রায় ৫০ ফুটের মতো সামনে চলে যায়।

রবিন আরও জানিয়েছে, বিষয়টি ট্রাক মালিক মো. আলেককে জানালে তিনি রবিনকে এক বছর আত্মগোপনে থাকার পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের ভয়ে পেছনে থাকা আরেকটি ট্রাকে চড়ে পালিয়ে যান তিনি।
র্যাব ১১ কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, “ঘটনার পর থেকেই ট্রাকের মালিক মো. আলেক আত্মগোপনে রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টার দিকে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের সিন্ধুরিয়াপাড়া কাটাজাঙ্গল তুতবাগান এলাকায় ট্রাক চাপায় অটোরিকশা চালক মো. জুলহাস মিয়া (৬০) মিয়া ও যাত্রীসহ ৫ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।