গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে এক মাসে ১১টি জেব্রা, ১টি বাঘ ও ১টি সিংহী মারা যাওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক তথ্যটি নিশ্চিত করে ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) তদন্ত প্রতিবেদন জমাদানের শেষ দিন ছিল। ওইদিনই প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে।
তিনি প্রতিবেদনে প্রাণী মৃত্যুর কারণ চিহ্নিত করার বিষয়ে কিছু বলতে না চাইলেও জানান, মন্ত্রণালয় থেকে পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
জানা গেছে, তদন্ত কমিটি সম্মিলিতভাবে ১৮ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন পরামর্শ উল্লেখ করে আরও পাতা যুক্ত করেছেন।

এর আগে, গত ২৬ জানুয়ারি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিককে আহ্বায়ক ও পরিবেশ-২ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরীকে সদস্য-সচিব করে সাফারি পার্কের প্রাণী মৃত্যুর ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।
পরে আবেদনের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ আরও ১০ দিন সময় বাড়িয়ে দেন এবং তদন্ত কমিটিতে তিনজনকে এবং সহযোগী বা পরামর্শক হিসেবে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আরও তিনজনকে যুক্ত করা হয়।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, বন অধিদপ্তরের বন সংরক্ষক এবং কেন্দ্রীয় পশু হাসপাতালের প্রাক্তন চিফ ভেটেরিনারি অফিসার ডা. এ বি এম শহীদুল্লাহ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি অনুষদের অধ্যাপক মো. আবু হাদী নূর আলী খান, কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারের (সিডিআইএল) প্রধান মো. আজম চৌধুরী ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি হিসেবে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক।
অন্যদিকে সহযোগী বা পরামর্শক হিসেবে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তিন কর্মকর্তা হলেন- কেন্দ্রীয় ভেটেরিনারি হাসপাতালের পরিচালক ডা. শফিউল আহাদ সরকার, ঢাকার কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে কর্মরত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুকেশ চন্দ্র বৈদ্য ও বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানায় কর্মরত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাজমুল হুদা।
প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি মাসে পার্কে ১১টি জেব্রা, ১টি বাঘ ও ৩ ফেব্রুয়ারি একটি সিংহী মারা যায়। পরে, এই প্রাণীদের রহস্যজনক মৃত্যুতে এবং তদন্তের স্বার্থে পার্কের শীর্ষ পর্যায়ের তিন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সাফারি পার্কে প্রাণী মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত প্রতিবেদনে আটকে আছে
তদন্ত কমিটিকে প্রাণীগুলোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন, মৃত্যুর ঘটনায় পার্কে কর্তব্যরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাফিলতি চিহ্নিতকরণ এবং এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সুপারিশ জানিয়ে নির্ধারিত ২০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।