রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের পাটকিয়াবাড়ি দাখিল মাদ্রাসার একমাত্র একতলা ভবনটি নির্মিত হয় ১৯৯৫ সালে। বর্তমানে ভবনের পাকা ভীম ও ছাদের পলেস্তারা খসে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই ঝুঁকি এড়াতে শিক্ষার্থীদের গাছতলায় নিয়ে পাঠদান চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
১৭ জন শিক্ষক কর্মচারী এবং তিন শতাধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাদ্রাসাটিতে কক্ষের অভাবে গাদাগাদি করে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল। গত কয়েক দিন ধরে ভবনের ভীমসহ ছাদের বিভিন্নস্থান থেকে পলেস্তারা খসে পড়তে শুরু করে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে ভবনটি। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আপন আহমেদ অন্তর, ষষ্ঠ শ্রেণির মোয়াজ্জেম হোসেন সংগ্রাম, তন্বী খাতুন, অষ্টম শ্রেণির স্বাধীন হোসেন জানায়, কয়েক দিন ধরে মাদ্রাসার ভবনের বিভিন্ন কক্ষের পলেস্তারা খসে পড়ছে। ভয়ে ওই ক্লাসরুমে ক্লাস করা যাচ্ছে না।
তারা বলে, “গাছতলায় বেঞ্চ বসিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। খোলা আকাশের নিচে প্রচণ্ড রোদে আমাদের কষ্ট হচ্ছে। পড়ার সময়ে গাছের পাতা ঝরছে, পাখি পায়খানা করছে। দ্রুত আমাদের ক্লাসরুম সংকট নিরসনে পদক্ষেপ কামনা করছি।”
পাটকিয়াবাড়ী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক উত্তম কুমার গোস্বামী বলেন, “একতলা ভবনের ভীম থেকে ও বিভিন্ন স্থানের পলেস্তারা খসে পড়ছে। দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে গাছতলায় পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাটকিয়াবাড়ী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বরাবরই ভালো রেজাল্ট করে আসছে। রেজাল্ট ভালো হলেও মাদ্রাসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কষ্ট লাঘবে প্রশাসনের কাছে পদক্ষেপ গ্রহণে হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
মাদ্রাসার সুপার মো. ফকরুল ইসলাম বলেন, “মাদ্রাসার অফিস কক্ষের ভীম থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে রড বেরিয়ে গেছে। ভাগ্যক্রমে সেখানে কেউ ছিল না। বিভিন্ন রুমে পলেস্তারা খসে পড়তে দেখে শিক্ষার্থীরা ভবনে ক্লাস করতে অনীহা প্রকাশ করে। তাই শিক্ষকদের সঙ্গে পরামর্শ করে আপাতত গাছতলায় বেঞ্চ বসিয়ে ক্লাস করানো হচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেছি।”
মাদ্রাসার সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “পাটকিয়াবাড়ী মাদ্রাসাটি পড়ালেখায় বরাবরই ভালো রেজাল্ট করলেও মাদ্রাসার কক্ষ সংকট, বেঞ্চ সংকট, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চরম কষ্টের মধ্যে পাঠদান করতে হয়। অনেকদিন ধরেই একতলা ভবনটিতে রংচটাসহ নানান সমস্যা দেখা দিয়েছে। গত দুই দিন ধরে ভীমসহ বিভিন্ন রুমের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। এ কারণে বাধ্য হয়েই গাছতলায় ক্লাস নিতে হচ্ছে।”
এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাসিবুল হাসান বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”