খুলনায় স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে চারজনের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের খানজাহান আলী এলাকার তেঁতুলতলা রেলক্রসিংয়ের কাছে এ ঘটনা ঘটেছে বলে খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ওই দম্পতি এলাকা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় চার হামলাকারী তাদের জোর করে একটি গ্যারেজে নিয়ে যায়। সেখানে মারধরের পর লোকটিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে প্রায় ১ ঘণ্টা তার স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালান তারা।
ওই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে, শনিবার সকালে খানজাহান আলী থানায় কামরুল, জীবন, সুমন এবং আলা নামে চারজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
ওসি বলেন, “খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ওই নারীর চিকিৎসা চলছে। জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
বাংলাদেশে ধর্ষণ মহামারি
২০২০ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশে কঠোর আইন চালু হওয়া সত্ত্বেও নারীর প্রতি যৌন সহিংসতার সংখ্যা কমেনি।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, শুধুমাত্র ২০২০ সালে দেশে ১,০১৮ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। অথচ পুলিশের কাছে মামলা দায়ের করা হয়েছিল ৬৮৩টির। এছাড়া, বেঁচে থাকা এই শিশুদের ১১৬ জনের বয়সই ছয় বছর বা তার চেয়েও কম।
সামগ্রিকভাবে, ২০২০ সালে ১,৬২৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে, ৫৩ জন নারী ধর্ষকদের হাতে নিহত এবং ১৪ জন আত্মহত্যা করেছেন।
তবে, বিভিন্ন সাহায্য সংস্থার মতে, এই সংখ্যা মূল সংখ্যার তুলনায় কিছুই না, কেননা, ভুক্তভোগীরা মামলা করতে খুব ভয় পান।
২০২০ সালের অক্টোবরে, নোয়াখালীতে এক নারীর ওপর হামলা ও ধর্ষণের অভিযোগের পর দেশ বিক্ষোভে কেঁপে উঠেছিল।
একই বছরের নভেম্বরে সারাদেশে নারীর প্রতি যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে চলা কয়েকদিনের বিক্ষোভের পর, বাংলাদেশ ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু করে।
কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এই পদক্ষেপ দেশের ধর্ষণ সংকটের সমাধান করবে না, কারণ বেঁচে থাকা ভুক্তভোগীরা প্রায়ই সমাজে লাঞ্ছনার শিকার হয়।