রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ৯ নম্বর সড়কে একটি নির্মাণাধীন ভবনে এ অভিযানের খবর নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম।
তিনি বলেন, ‘গত রবিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই অভিযান চালানো হয়। জায়গাটি মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। বসুন্ধরার আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের নির্মাণাধীন এই ভবনটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির পাশেই। এখানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আড্ডাবাজি ও নিয়মিত গাঁজা সেবন করে থাকেন। মাদকের একটি বড় আখড়ায় পরিণত হয়েছিল এটি। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এখানে গাঁজার গন্ধ পাওয়া যেতো। আশেপাশের লোকজন বিষয়টি জানলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভয়ে কেউ বাধা দিতো না। বিষয়টি র্যাব-১ জানতে পেরে রবিবার দুপুর ১টার দিকে ওই ভবনে আকস্মিক অভিযান চালায়।’
র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের উপস্থিতিতে ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১) এর ৭(ক) মোতাবেক আহসান জামিল (২৩), রাগিব ইয়াসার আলম সামি (২১), মোবাশ্বির রহমান (২৩) রোনা ইয়ালিদ দিগন্ত (২০) জারিফ সিদ্দিক (২১) রাসেল আহমেদ (২৩), ওয়াসিফ জাহিদ (২৪) সালমা মাহমুদ (২৩), অনুপম হোসেন (২৫), তামজিদ আরিফুল হক (২৩), নির্জয় শুভ (২২), নাফিস আলীম (২৫), নামজুল হৃদয় (২২) এরশাদ দেওয়ান (২০), জারিফ আলম (২৩), সৌরভ কান্তি রায় (২৪), তৌসিফ হোসেন নিরব (২১), নূর আল হোসাইন নিলয় (২১), আবরার মো. তাহসীন (২২), তাসলিম হাসান (২২), অনিকা তাসমিন শৈলী (২২), তিসিতান আক্তার (২২) ও জেরিন আনজুমকে (২০) সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ইব্রাহিম সফি (২০) নাফিস আকাশ (২১) অর্ণব সাহা (২১) তামজিদুল ইসলাম বাবর (১৯), এনামুল হক (১৮), নেকবর আলী (৪৪) শ্রী সমুন সাহা (২৬)কে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও রাকিব হোসানইকে (২৪) ৯ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ জন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ ও ৬ জন নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির। তাদের মধ্যে ৪ জন নারী শিক্ষার্থীও আটক হয়েছেন।
র্যাব-১ অধিনায়ক জানান ‘অভিযানের পর নর্থ সাউথ ও ইন্ডিপেন্ডেট ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করে দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা চেয়েছিল। তাদের সেই তালিকা সরবরাহ করা হয়েছে। তবে অভিযানের সময় অনেক শিক্ষার্থী চাতুর্যের আশ্রয় নিয়ে নিজেদের নাম-ঠিকানা ভুল বলেছিলেন। পরে তাৎক্ষণিক তা যাচাই-বাছাই করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’
ট্রাস্ট এলায়েন্সের নির্মাণাধীন এই ভবনটির মালিককে ধরার চেষ্টা করলেও তিনি আগেই পালিয়ে গেছেন। মাদক সেবনের পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের প্রমাণও পাওয়া গেছে ঘটনাস্থলে।