ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে গত দু’দিন ধরে কর্মস্থল ছেড়ে বাড়িতে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-রুটে গত দুদিন ধরেই ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে।
রবিবার (১ মে) সকাল থেকেই ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটে দেখা যায় রাজধানী ছেড়ে আসা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার মানুষ দৌলতদিয়া ঘাট পার হচ্ছেন।
এদিকে, শনিবার মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের চাপ বেশি থাকলেও আজ রবিবার এই গাড়িগুলো খুব বেশি চোখে পড়েনি। পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরি ও ফেরিতে থাকা বাসগুলোতে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে। লঞ্চগুলোতেও দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। অনেক লঞ্চকেই ধারণ ক্ষমতার থেকে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, দৌলতদিয়া ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় নেই কোনো যানবাহন। যে যানবাহনগুলো আসছে সেগুলোকে সরাসরি ফেরিতে উঠতে দেখা গেছে। পাটুরিয়া থেকে যেসব যাত্রী আসছেন তারা দৌলতদিয়া থেকে কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়াই যার যার গন্তব্যে যেতে পারছেন।
তবে অনেক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটের মাহেন্দ, অটো, লেগুনা এগুলো ভাড়া বেশি নিচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফরিদপুর জেলাসহ বিভিন্ন এলাকার যাত্রীদের ঘাট থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ মোড়ে গিয়ে গাড়িতে উঠতে হচ্ছে। ২০ টাকার অটো ভাড়া ৫০-৬০ টাকা দিতে হচ্ছে।
অন্যদিকে ফরিদপুর, বোয়ালমারীতে যেসব মাহেন্দ্র বা লেগুনাকে (অবৈধ যানবাহন) চলাচল করতে দেখা গেছে, সেগুলোকে ৬০ টাকার ভাড়া ২০০ টাকা পর্যন্ত নিতে দেখা গেছে।
ঢাকা থেকে ফরিদপুর বোয়ালমারীগামী যাত্রী ফরহাদ শেখ বলেন, “অনেকক্ষণ বাসের জন্য অপেক্ষা করে বাস পেলাম না। বাধ্য হয়েই লেগুনায় ৮০ টাকার ভাড়া ২০০ টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে। এই ঘাটে প্রতি ঈদেই এরকম ভোগান্তি পোহাতে হয়।”
বোয়ালমারিগামী আরেক যাত্রী কাওছার আহমেদ বলেন, “আমিও অনেকক্ষণ ধরে দাড়িয়ে আছি, ফরিদপুরের বাস পাচ্ছি না। এখান থেকে ফরিদপুরে অটো, মাহেন্দ্র, লেগুনা যাচ্ছে কিন্তু ভাড়া চাচ্ছে কয়েকগুণ বেশি।”
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আজিজুল হক বলেন, “ভাড়া বেশি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমাদের কাছে অভিযোগ আসলেই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।”
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান বলেন, “এই নৌ-রুটে এখন ছোট বড় ২১ টি ফেরি চলাচল করছে ও ২১ টি লঞ্চ চলাচল করছে।”