Saturday, June 14, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজা নিয়ে হাজি সেলিম ‘ব্যাংককে’

দেশত্যাগের সময়ে কারণ হিসেবে আওয়ামী লীগের এ সাংসদ চিকিৎসার কথা বলে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গিয়েছেন

আপডেট : ০২ মে ২০২২, ০৭:৫৪ পিএম

দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ড নিয়ে আওয়ামী লীগের সাংসদ হাজি সেলিম থাইল্যান্ড গিয়েছেন। তার সফরসঙ্গী হিসেবে কেউ ছিলেন না। দেশত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি “ব্যাংককে চিকিৎসার” কথা জানিয়েছেন।

শনিবার (৩০ এপ্রিল) হাজি সেলিমের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণ। শনিবার বিকেলে কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ব্যাংকক যান বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

আওয়ামী লীগ সাংসদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাতে প্রথম আলো জানায়, বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে তিনটি গাড়ির একটি বহর নিয়ে আজিমপুর কবরস্থানে যান হাজি সেলিম। তার যাওয়ার বিষয়ে গাড়ির চালকেরা আগে থেকে কিছু জানতেন না। আজিমপুরে যাওয়ার সময় হাজি সেলিম তার সবসময় ব্যবহৃত গাড়িটি নেননি। গাড়ির চালকও ছিলেন অন্য এক ব্যক্তি।

সূত্র আরও জানায়, হাজি সেলিমের পরিবারের সদস্য কিংবা ঘনিষ্ঠদের কেউ তার যাত্রাসঙ্গী ছিলেন না। চিকিৎসার কথা বলে ব্যাংকক যাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে হাজি সেলিম যাওয়ার আগে বা পরে তার ঘনিষ্ঠ কেউ ওখানে গিয়ে থাকতে পারেন।

হাজি সেলিমের বড় ছেলে সোলাইমান সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে প্রথম আলো। তবে অন্য এক ব্যক্তি ফোন ধরেন এবং এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই বলে দাবি করেন। যদিও ১ মে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রশ্নের উত্তরে সোলাইমান সেলিম জানান, তার বাবা বর্তমানে দেশে নেই। হাজি সেলিমের ব্যক্তিগত সহকারী মহিউদ্দিন বেলালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি হাজি সেলিমের ১০ বছর সাজা বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। দুর্নীতির মামলায় এক যুগ আগে বিচারিক আদালতের রায়ে সাংসদ হাজি সেলিমের ১৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাজি সেলিম হাইকোর্টে আপিল করেন।

এ আপিলের শুনানি নিয়ে গত বছরের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেন। এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়।

রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাইকোর্ট আওয়ামী লীগের সাংসদকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এ আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। এ সময়সীমার মধ্যেই হাজি সেলিম দেশ ছেড়েছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, “আমি মনে করি, সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় হাজি সেলিমের সংসদ সদস্য পদ আর নেই। একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদেশ যেতে পারেন না। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ার কারণেই বিদেশে যেতে পারেননি। হাজি সেলিমেরও বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই। তার তো আত্মসমর্পণ করার কথা।”

আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী (মানিক) রবিবার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছেন, “এক্ষেত্রে তার (হাজি সেলিম) সাজা হয়েছে বিচারিক আদালতে। আপিল প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতেও তার সাজা বহাল রয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করার আদেশ দিয়েছেন। সে অবস্থায় সেই ব্যক্তি কোনোভাবেই দেশত্যাগ করতে পারেন না।”

হাজি সেলিমকে দেশত্যাগে সহায়তাকারীরা অপরাধ করেছেন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যারা তাকে দেশত্যাগ করতে সাহায্য করেছেন, তারা মস্ত বড় অপরাধ করেছেন। তারা সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করেছেন। এখন তিনি দেশে ফিরে না এলে তখন কী হবে? সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তার দেশে ফেরার সম্ভাবনাও কম।”

   

About

Popular Links

x