জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে হামলায় আহত এক ভিক্ষুক পরিবারকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটক করে থানায় পাঠানোর ঘটনায় পুলিশের চারজন এসআইকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় দুই পুলিশ কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ মে) রাতে ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বরখাস্ত চার এসআই হলেন- আলতাফ হোসেন, সাইফুল ইসলাম, ওয়াজেদ আলী ও মুনতাজ। অন্যদিকে, প্রত্যাহার হওয়া দুই কনস্টেবল হলেন- মোজাম্মেল হক ও সাথী আক্তার।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সরিষাবাড়ী পৌরসভার বাউসি বাজার এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে ভিক্ষুক আব্দুল জলিল (৬৪) তার ২০ শতক জমির উপর বসতভিটা তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি মুজিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তি ওই জমিটি তার নিজের বলে দাবি করায় দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় আদালতে মামলা হলে আদালত আব্দুল জলিলের পক্ষে রায় দেয়।
সোমবার (৯ মে) সকালে আদালতের আদেশ অমান্য করে মুজিবুর রহমান দলবল আর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুল জলিলের পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এতে আব্দুল জলিল, তার স্ত্রী লাইলী বেগম (৫০) ও তার তিন ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক (৩০), ওয়ায়েজ করোনি (২৫) ও হামদাদুল হক(১৬) গুরুতর আহত হন। পরে তাদের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, হামলার পর মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে চিকিৎসাধীন চারজনসহ ১৫ জনকে আসামি করে সরিষাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর মঙ্গলবার হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এজাহারভুক্ত ওই চার আসামিকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তারা পুলিশের সঙ্গে যেতে রাজি না হওয়ায় হাসপাতালের শয্যা থেকে তাদেরকে টেনে হেঁচড়ে থানায় নিয়ে আসা হয়। কিছু সময় থানা হাজতে রেখে বিকেলে আদালতে তোলা হয়।
আব্দুল জলিলের স্বজনদের অভিযোগ, সোমবার রাতে আব্দুল জলিল থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ উল্টো তাকে থানায় আটকে রাখে। পরে সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রকিবুল হক জানান, মুজিবুর রহমান বাদি হয়ে সোমবার রাতে আব্দুল জলিলসহ বেশ কয়েকজনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এরপর হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ায় পরই তাদেরকে আটক করা হয়েছিল।
জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিষয়টি জানতে পেয়ে আমি তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ঘটনায় ইতোমধ্যেই চার এসআই বরখাস্ত ও দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।”