মনির হোসেন ও শামীমা বেগম দম্পতি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) ১৮ ব্যাচের কর্মকর্তা। দুজনই বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত। মনির কর্মরত আছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অপারেশন বিভাগের যুগ্ম কমিশনার হিসেবে। আর তার স্ত্রী শামীমা বেগম ডিএমপির ট্রান্সপোর্ট বিভাগের যুগ্ম কমিশনার।
একই দিনে এই দম্পতি পেলেন পদোন্নতির সুখবর। বুধবার (১২ মে) উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া পুলিশের ৩২ কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছে মনির ও শামীমার নাম।
এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে দৈনিক সমকালের অনলাইন সংস্করণ।
বাহিনীর নীতিনির্ধারকদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো দম্পতির ডিআইজি একসঙ্গে পদোন্নতির নজির পুলিশের ইতিহাসে এই প্রথম।
এমন সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত খুশি এই দম্পতি। পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তারাও তাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
শামীমার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের ডিসিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। আর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে দু'টি দেশের পুলিশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
মনিরের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। কঙ্গো এবং দারফুরে শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করা ছাড়াও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে দক্ষতার ছাপ রেখেছেন এই কর্মকর্তা।
দক্ষতার কারণে বাহিনীর ভেতরে এই দম্পতির আলাদা সুনাম রয়েছে।
শামীমা সমকালকে বলেন, এটি গর্বের ও ভাগ্যের বিষয়। একসঙ্গে এতো দূর আসা। সিনিয়র-জুনিয়র সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের চাকরিতে যোগদানের পর থেকে মনিরের সঙ্গে পরিচয়। এরপর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের একমাত্র মেয়ে ধানমন্ডির একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের স্ট্যান্ডার্ড থ্রিতে পড়ছে।
মনির হোসেন বলেন, এই অর্জনে অত্যন্ত খুশি। সবার দোয়া ও শুভ কামনায় এই অর্জন। আগামীতেও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যেতে চাই।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এর আগে একাধিবার একসঙ্গে একাধিক পুলিশ দম্পতি এসপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। তবে ডিআইজি হিসেবে একসঙ্গে পুলিশ দম্পতির ঘটনা বাহিনীর ইতিহাসে আর কখানো দেখা যায়নি।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ডিআইজিদের পদোন্নতি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। পদোন্নতি পাওয়া অন্য কর্মকর্তারা হলেন- র্যাবের পরিচালক (অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক) মোজাম্মেল হক ও মাহফুজুর রহমান, পুলিশ অধিদপ্তরের রেজাউল হক, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মনির হোসেন, এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) মো. মনিরুজ্জামান, হাইওয়ে পুলিশের মিজানুর রহমান, ডিএমপির মুনিবুর রহমান, সিলেট মহানগর পুলিশের পরিতোষ ঘোষ, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের জয়দেব কুমার ভদ্র, পুলিশ অধিদপ্তরের কাজী জিয়া উদ্দিন, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের গোলাম রউফ খান, ডিএমপির মো. আসাদুজ্জামান, ডিএমপির মাহবুব আলম, র্যাবের শেখ মোহাম্মদ রেজাউল হায়দার, এটিইউ'র সালমা বেগম, ডিএমপির মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ, বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের এ কে এম এহসান উল্লাহ, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের শাহ মিজান শাফিউর রহমান, নৌ পুলিশের মোল্যা নজরুল ইসলাম, পুলিশ অধিদপ্তরের এস এম মোস্তাক আহমেদ খান, ঢাকা রেঞ্জের জিহাদুল কবির, ডিএমপির মঈনুল হক, ইলিয়াছ শরীফ, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের নূরে আলম মিনা, ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের শাহ আবিদ হোসেন, র্যাবের জামিল হাসান, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের মাহবুবুর রহমান, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের সাইফুল ইসলাম, ডিএমপির সৈয়দ নুরুল ইসলাম, আনিসুর রহমান এবং মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।