চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সাদা পোশাকে থাকা র্যাব সদস্যদের ওপর “ডাকাত” বলে হামলার নেতৃত্বে এক ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম মো. তানভীর হোসেন ভূঁইয়া। তিনি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও র্যাব সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো।
জানা গেছে, তানভীর ওই এলাকার মাদকসহ নানা অপরাধের নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে পরিচিত। গত বুধবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় তার কাছ থেকে মাদক উদ্ধারে গিয়ে হামলার শিকার হন র্যাবের সদস্যরা।
মিরসরাই উপজেলার বারইয়ারহাট পৌর বাজারে শান্তিরহাট রাস্তার মাথায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে হামলার শিকার হন র্যাবের সদস্যরা। এতে দুই র্যাব সদস্য ও তাদের এক সোর্স গুরুতর আহত হন। আহত র্যাব সদস্যরা বর্তমানে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থানায় হামলা, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা করেছে। এই তিন মামলার মধ্যে দুটিতে (হামলা ও মাদক) তানভীরকে আসামি করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে র্যাব ৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, “র্যাবের কাছে তথ্য ছিল তানভীর তার কিছু সহযোগী নিয়ে মাদকের ব্যবসা করেন। তানভীরের সহযোগী মো. ফরহাদ ও মো. সাকিবের কাছ থেকে ক্রেতা সেজে তথ্য সংগ্রহ ও মাদক কেনার জন্য যান বারাইয়ারহাটে সাদাপোশাকের র্যা ব সদস্যরা। তানভীর নিজেই তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে ইয়াবা ও ফেনসিডিল দিতে আসেন। তারা লোকজন মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ছিলেন। ওই সময় র্যা বের সদস্যরা তানভীরের এক সহযোগীকে আটকের চেষ্টা করেন।”
তিনি জানান, একপর্যায়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে থাকা তানভীরসহ সহযোগীরা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করতে থাকেন। একই সময়ে একটি কাভার্ড ভ্যানে থাকা লোকজনও ডাকাত ডাকাত চিৎকার করে। এই চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে তানভীরের সহযোগীরা র্যাব সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় র্যাবর ব্যবহৃত গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে, র্যাব সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেনীর ছাগলনাইয়া ও মিরসরাইয়ের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সাইদুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, এস এম শাফায়েত হোসেন, মফিজুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, সোয়েব উদ্দিন, মো. সাইদুল ইসলাম, নাহিদ উদ্দিন, মো. আবু সাঈদ, নাসির উদ্দিন, মো. মাঈন উদ্দিন, হোসেন ও ফাহাদ।
র্যাব ৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) নুরুল আবসার বলেন, “ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে হামলাকারীদের পরিচয় শনাক্ত করে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হামলার সময় সাইদুর এক র্যাব সদস্যের কাছ থেকে একটি অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যান। পরে সাইদুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছিনিয়ে নেওয়া অস্ত্রটি শাফায়েতের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।”
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ২ হাজার ইয়াবা বড়ি, ৫২ বোতল ফেনসিডিল ও ১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।