চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পেছনে ভূমিকা ছিল সেখানে থাকা বিপুল পরিমাণ “হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড” নামের এক প্রকার দাহ্য রাসায়নিকের। চার বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরে ৬০৯ ড্রাম হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড পড়ে রয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে এগুলো নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সোমবার (৬ জুন) বিকেলে এ দাহ্য রাসায়নিক প্রকাশ্য নিলামে তুলে বিক্রি করা হবে। চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার (নিলাম) আলী রেজা হায়দারের বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে অনলাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, চার বছর আগে গাজীপুরের কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেড তুরস্ক থেকে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের চালানটি নিয়ে আসে। আমদানির পর সেগুলো আজও খালাস করেনি। এরপর থেকে দুই কনটেইনারের চালানটি বন্দরের চত্বরে পড়ে আছে। চালানটিতে ৩০ হাজার ৪৫০ কেজি হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রয়েছে। এই চালানের সংরক্ষিত দাম ধরা হয়েছে ২৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন- সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোতে বিপুল পরিমাণ দাহ্য রাসায়নিক
আলী রেজা হায়দার জানান, সীতাকুণ্ডের ঘটনার পর রবিবার বন্দর কর্তৃপক্ষ বিপজ্জনক পণ্য নিলামে তোলার জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়। চিঠি পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে সেগুলো নিলামে তুলে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।
মূলত হাইড্রোজেন পারক্সাইড মূলত একটি রাসায়নিক যৌগ। যদি হাইড্রোজেন পারক্সাইডকে উত্তপ্ত করা হয়, তাহলে তাপীয় বিয়োজনে তা বিস্ফোরক হিসেবে আচরণ করে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার (নিলাম) আরও জানান, দুই কনটেইনারের চালানটি প্রকাশ্য নিলামে তোলা হবে। সংরক্ষিত দামের ১০ শতাংশ পে-অর্ডার বা নগদ টাকা দিয়ে আগ্রহীরা নিলামে অংশ নিতে পারবেন। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড টেক্সটাইল, ডাইংসহ নানা শিল্পে ব্যবহার করা হয়। এই পণ্য একসময় আমদানি হলেও বর্তমানে রপ্তানি হচ্ছে।
উল্লেখ্য, শনিবার রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর দ্রুত চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে যৌথভাবে কাজ করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন, র্যাব, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি ও স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।